স্টাফ রিপোর্টার, গাজীপুর :: বিয়ের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করায় বাসায় ঢুকে কলেজছাত্রীকে হত্যা করেছেন তাদেরই গৃহশিক্ষক। এ সময় বাধা দিলে ওই ছাত্রীর মা ও তিন বোনকে কুপিয়ে জখম করা হয়। মা বর্তমানে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন। সোমবার রাতে গাজীপুরের সালনা এলাকায় এ ঘটনাটি ঘটেছে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত শিক্ষক সাইদুল ইসলাম (২৫) পলাতক রয়েছেন। তিনি ময়মনসিংহের মুক্তাগাছা থানার মহেশতারা গ্রামের ফজলুর রহমানের ছেলে। তিনি দক্ষিণ সালনা এলাকার একটি মাদ্রাসার শিক্ষক। এ ঘটনায় নিহত কলেজ ছাত্রীর বাবা বাদী হয়ে গাজীপুর সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন।
নিহত শিক্ষার্থী রাবেয়া আক্তার (২১) গাজীপুরের দক্ষিণ সালনা এলাকার আবদুর রউফের মেয়ে। তিনি ভাওয়াল বদরে আলম সরকারি কলেজের স্নাতক দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী ছিলেন। ঘটনার সময় ছুরিকাঘাতে আহত হয়েছেন রাবেয়ার মা ইনসুরেত নেছা (৫০), বোন হাবিবা (১৮), খাদিজা (১৫) ও জান্নাত (১৩)।
পুলিশ ও মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, কুমিল্লার হোমনার শ্রীমতি এলাকার বাসিন্দা আবদুর রউফ সালনা বাজারে একটি শোরুমে চাকরি করেন। সেখানেই সপরিবার বসবাস করেন। ছোট দুই মেয়েকে কোরআন শিক্ষার জন্য সাইদুল ইসলামকে হাউস টিউটর হিসেবে নিয়োগ করেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্র আরও জানায়, রাবেয়া আক্তারকে পড়ার এক পর্যায়ে তাকে বিয়ের প্রস্তাব দেয়। এই প্রস্তাব রাবেয়া আক্তার প্রত্যাখান করে। পরে সাইদুল রাবেয়াকে বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে বিয়ে করার জন্য চেষ্টা করেন। কিন্তু রাবেয়া আক্তারের পরিবার বিষয়টি মেনে নিতে না পেরে সাইদুলকে বাসায় এসে পড়ানোর জন্য নিষেধ করেন। এরপর সাইদুল সোমবার রাত সাড়ে আটটার দিকে তাদের বাসায় প্রবেশ করে প্রথমে রাবেয়াকে ছুরি দিয়ে মাথা, গলা, হাত ও পায়ে এলোপাতাড়ি আঘাত করতে থাকেন। তাঁর চিৎকারে মা ও দুই বোন দৌড়ে রাবেয়া আক্তারের ঘরে গিয়ে দেখেন, সাইদুল ছুরি দিয়ে রাবেয়াকে ছুরিকাঘাত করছেন। এ সময় তাঁকে বাধা দিলে ছুরি দিয়ে তিনি অন্যদেরও আঘাত করে পালিয়ে যান।
নিহত কলেজ ছাত্রীর বাবা আবদুর রউফ বলেন, সাইদুল আমাদের গৃহশিক্ষক ছিল। ছোট দুই মেয়েকে সে কোরআন পড়াত। সে আমার বড় মেয়েকে বিয়ে করার প্রস্তাব দিলে আমরা সরাসরি না করে দিই। যার কারণেই সে বাড়িতে ঢুকে আমার মেয়েকে কুপিয়ে হত্যা করেছে। গুরুতর অবস্থায় রাবেয়াকে স্থানীয় ব্যক্তিরা শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে রাতেই তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক। আশঙ্কাজনক অবস্থায় রাজধানীর একটি হাসপাতালে আইসিইউতে চিকিৎসাধীন রাবেয়ার মা। আহত হয়েছে রাবেয়ার ছোট তিন বোন।
গাজীপুর সদর থানার ওসি জিয়াউল ইসলাম বলেন, খবর পেয়ে মঙ্গলবার সকালে আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে রক্তাক্ত ছুরি উদ্ধার কছি। এ ঘটনায় নিহত ছাত্রীর বাবা বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছে। এ ঘটনায় জড়িত আসামীকে গ্রেফতার করতে চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।