April 28, 2024, 10:55 pm

রোজার আগে বাজার ঊর্ধ্বমুখী, অসন্তোষ ক্রেতাদের

Reporter Name
  • আপডেট Friday, March 8, 2024
  • 47 জন দেখেছে

দৈনিক বিজয়বাংলা ডেস্ক :: রোজার আগে আজ শেষ শুক্রবার। বাজারে ক্রেতাদের উপস্থিতি ছিল তুলনামূলক বেশি। নিত্য পণ্যের উচ্চ মূল্যে ক্রেতাদের মধ্যে অসন্তোষ ছিল লক্ষণীয়। আলু, দেশি রসুন, বেগুন, সব ধরনের মুরগির মাংস, গরুর মাংস এবং প্রায় সব ধরনের ডাল বিক্রি হচ্ছে বেশি দামে।
বাজার কর‍তে আসা ক্রেতারা বলছেন, সরকার রোজায় দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে থাকবে বললেও সেটা হচ্ছে না। সবকিছুর দামই বেড়েছে। অন্যদিকে বিক্রেতারা বলছেন, ক্রেতারা বেশি চাহিদা দেখাচ্ছে বলেই সবকিছুর দাম বাড়তি। আজ শুক্রবার (৮ মার্চ) মিরপুর ১ নম্বর কাঁচাবাজারে সরেজমিন দেখা গেছে এমন চিত্র।
আজকের বাজারে বেশ কিছু সবজির দাম উল্লেখ করার মতো কমেছে। এসব সবজির মধ্যে রয়েছে— মটরশুঁটি, ঢেঁড়স, পটল, উচ্ছে। এগুলোর দাম কমেছে ২০ থেকে ৬০ টাকা পর্যন্ত। আবার রোজায় চাহিদা বেশি থাকে এমন সবজির দাম বেড়েছে। এর মধ্যে রয়েছে আলু ও সব ধরনের বেগুন। এই দুই সবজির দাম বেড়েছে যথাক্রমে ৫ টাকা ও ২০ টাকা। এসব সবজি ছাড়া অন্যান্য সবজির দাম কিছুটা বাড়া-কমা বা অপরিবর্তিত রয়েছে।
আজকের বাজারে শিম ৬০ টাকা, টমেটো ৫০ টাকা, পেঁয়াজ কলি ৪০ টাকা, মটরশুঁটি ৬০ টাকা, সাদা মুলা ৬০ টাকা, দেশি গাজর ৪০ টাকা, লম্বা বেগুন ৮০ টাকা, সাদা গোল বেগুন ৮০ টাকা, কালো গোল বেগুন ৮০ টাকা, শসা ৬০-৮০ টাকা, খিরাই ৪০ টাকা, উচ্ছে ১০০ টাকা, করলা ১৬০ টাকা, পেঁপে ৪০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ৩০ টাকা, ঢেঁড়স ১০০ টাকা, পটল ১০০ টাকা, চিচিঙ্গা ৬০ টাকা, ধুন্দল ৬০ টাকা, বরবটি ১২০ টাকা, কচুর লতি ১০০ টাকা, সজনে ২০০ টাকা, কচুরমুখী ১২০, কাঁচা মরিচ ১০০ টাকা, ধনেপাতা ১২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। আর প্রতিটি লাউ ১০০ টাকা, ফুলকপি ৫০ টাকা, বাঁধাকপি ৫০ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে।
বাজার করতে আসা চাকরিজীবী সাইফুজ্জামান বলেন, সরকার বলেছিল রোজার বাজারে জিনিসপত্রের দাম কম থাকবে। সেরকম কিছু তো দেখছি না। উল্টো বেগুনের দাম বেড়ে গেছে। রোজায় চাহিদা বাড়লেই কী ব্যবসায়ীরা বেশি নেবে, ক্ষোভ নিয়ে বলেন তিনি।
বাজার করতে আসা আরেক ক্রেতা শাহীন রহমান বলেন, যখন যেটা বেশি লাগে তখন সেটারই দাম বেড়ে যায়। অদ্ভুত এক পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে আমরা যাচ্ছি।
এদিকে সবজি বিক্রেতারা বলছেন ভিন্ন কথা। তারা বলছেন, ক্রেতারা একদিনে সব কিনতে চায়। এতে বাজারে নির্দিষ্ট কিছু পণ্যের চাহিদা বেড়ে যায়। আর এটা আগে বুঝতে পেরেই জিনিসপত্রের দাম বাড়িয়ে দেয় পাইকারি ব্যবসায়ীরা। তখন বাজারে এসে কাস্টমাররা বলেন দাম বেশি। তারা আগে-পরে কিনলেই কিন্তু এমন হয় না।
এছাড়া আজকে মানভেদে দেশি পেঁয়াজ ৯০-১১০ টাকা, লাল ও সাদা আলু ৩৫ টাকা, নতুন দেশি রসুন ১৫০ টাকা, চায়না রসুন ২০০ টাকা, ভারতীয় আদা ২২০, চায়না আদা ২০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এক্ষেত্রে গত সপ্তাহের তুলনায় দেশি রসুনের দাম ১০ টাকা এবং আলুর দাম ৫ টাকা বেড়েছে। আর পেঁয়াজের দাম ২০-৩০ টাকা কমেছে।
আলু কিনতে আসা আকাশ বলেন, কয়েক দিন আগেই ৪ কেজি আলু ১০০ টাকায় কিনেছি ভ্যানগাড়ি থেকে। আজকে কিনতে হচ্ছে ৩৫ টাকা কেজি। রোজা আসতেই দাম বেড়ে গেছে।
আজকে ছোট মসুর ডাল ১৪০ টাকা, মোটা মসুর ডাল ১১০ টাকা, বড় মুগ ডাল ১৫০/১৬০ টাকা, ছোট মুগ ডাল ১৬০/১৮০ টাকা, খেসারি ডাল ১১০/১১৫ টাকা, বুটের ডাল ১১০/১১৫ টাকা, ছোলা ১১০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে দেখা যায়, বড় মুগ ডাল ১০ টাকা, ছোট মুগ ডাল ২০ টাকা, খেসারি ডাল ৫ টাকা, বুটের ডাল ৫ টাকা বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে।
এছাড়া মুদি দোকানের অন্যান্য পণ্যের দাম রয়েছে অপরিবর্তিত। আজকে প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেল ১৬৩ টাকা, খোলা সয়াবিন তেল ১৪৯ টাকা, প্যাকেটজাত চিনি ১৪৫ টাকা, খোলা চিনি ১৪০ টাকা, দুই কেজি প্যাকেট ময়দা ১৫০ টাকা, আটা দুই কেজির প্যাকেট ১৩০ টাকা, খোলা সরিষার তেল প্রতি লিটার ১৯০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এক্ষেত্রে বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম কমেছে প্রতি লিটারে ১০ টাকা করে।
এছাড়া আজকের বাজারে ইলিশ মাছ ওজন অনুযায়ী ১৪০০-২২০০ টাকা, রুই মাছ ৩৮০-৫৫০ টাকা, কাতল মাছ ৪০০-৭০০ টাকা, কালিবাউশ ৫০০-১০০০ টাকা, চিংড়ি মাছ ৬০০-১২০০ টাকা, কাঁচকি মাছ ৪০০ টাকা, কৈ মাছ ৬০০-১২০০ টাকা, পাবদা মাছ ৫০০-৮০০ টাকা, শিং মাছ ৪০০-১২০০ টাকা, টেংরা মাছ ৬০০-১০০০ টাকা, মেনি মাছ ৫০০-৮০০ টাকা, বেলে মাছ ১২০০ টাকা, বোয়াল মাছ ৭০০-১৪০০ টাকা, রূপচাঁদা মাছ ১০০০-১২০০ টাকা, শোল মাছ ৭০০-১২০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
আজকে মাছের দাম অন্য সময়ের মতো থাকলেও সব ধরনের মাংস বিক্রি হচ্ছে বেশি দামে। এর মধ্যে দেশি মুরগির দাম এক লাফে ১৮০ টাকা বেড়ে গেছে।
আজকে ব্রয়লার মুরগি ২১৫-২২৫ টাকা, কক মুরগি ৩১৫-৩২৫ টাকা, লেয়ার মুরগি ৩২০ টাকা, দেশি মুরগি ৫০০/৬৮০ টাকা, গরুর মাংস ৭৫০/৭৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। মুরগির লাল ডিম ১৩৫ টাকা এবং সাদা ডিম ১২৫ টাকা প্রতি ডজন বিক্রি হচ্ছে।
অন্যান্য সময় ব্রয়লার মুরগি ২০০ টাকার মধ্যে থাকলেও আজকে বিক্রি হচ্ছে বেশি দামে। কক মুরগির ক্ষেত্রেও একই চিত্র, ৩০০ টাকার মধ্যে বিক্রি হলেও আজ বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে। দেশি মুরগির দাম ৫০০ থাকলেও আজ ৬৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। একইভাবে গরুর মাংস ৩০ টাকা বেশিতে ৭৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

সোস্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই সম্পর্কিত আরও খবর