নিজস্ব প্রতিবেদক :: প্রতিমা পোড়ানোর সন্দেহে ফরিদপুরে দুই ভাইকে হত্যার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে ইসলামী ছাত্রশিবির। সংগঠনের কেন্দ্রীয় সভাপতি মঞ্জুরুল ইসলাম বলেন, সম্প্রতি ফরিদপুরে প্রতিমা পোড়ানোর অভিযোগে দুজন নির্মান শ্রমিককে পিটিয়ে নির্মমভাবে হত্যার করা হয়েছে। সুনির্দিষ্ট কোনো প্রমাণ ছাড়াই শুধুমাত্র সন্দেহের বশে এমন নারকীয় ঘটনা বিশ্ববিবেককে নাড়া দিয়েছে। আমরা এহেন নারকীয় ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। আজ সোমবার বিকালে রাজধানীর এক মিলনায়তনে ছাত্রশিবির ঢাকা মহানগর দক্ষিণ শাখার ঈদ পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। মহানগর সভাপতি আহমদ আবির সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি হেলাল দ্দিনের সঞ্চালনায় মহানগর শাখার বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
মঞ্জুরুল ইসলাম বলেন, ‘৯০ ভাগ মুসলমানের দেশে এভাবে দুজন মুসলিম ব্যক্তিকে পিটিয়ে হত্যা খুবই দুঃখজনক। এটা স্পষ্টত সাম্প্রদায়িক উসকানির শামিল। কোনো অপরাধ কেউ যদি করেও থাকে তাহলে দেশের প্রচলিত আইন অনুযায়ী তার বিচার হবে। কিন্তু শুধুমাত্র সন্দেহের ভিত্তিতে আইন নিজের হাতে তুলে নিয়ে ২ জন মানুষকে পিটিয়ে হত্যা করা দেশের আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখানোর শামিল।’
‘অপরাধের সঙ্গে যখন বিশেষ কোনো ধর্মের মানুষ জড়িত থাকে, তখন এর পেছনে গভীর ষড়যন্ত্র থাকতে পারে বলে সন্দেহ প্রকাশ করার যথেষ্ট সুযোগ আছে’ এমন মন্তব্য করে শিবির সভাপতি বলেন, ‘ঘটনার প্রকাশ পাওয়া ভিডিওতে দেখা যায়, একটি ঘরের মধ্যে তাদের বেঁধে অনেকে মিলে নির্মমভাবে পিটাচ্ছে। ঘটনার পর স্থানীয় জেলা প্রশাসকও বলেছেন, এটি কোনো গণপিটুনি নয় বরং পরিকল্পিত হত্যা। আমাদের দাবি, হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। যদি এক্ষেত্রে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে ব্যর্থ হয়, আর এর ফলে পরিস্থিতি যদি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়, এর দায় সরকার ও প্রশাসনকেই বহন করতে হবে।’
প্রসঙ্গত, গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ফরিদপুর জেলার মধুখালী উপজেলার ডুমাইন ইউনিয়নে একটি মন্দিরে প্রদীপ জ্বালানোর কিছুক্ষণ পরেই সেখানে আগুনের সূত্রপাত ঘটে। মন্দিরের পাশেই প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শৌচাগার নির্মাণের কাজে নিয়োজিত ছিলেন কয়েকজন শ্রমিক। শ্রমিকদের দ্বারা সংঘটিত হতে পারে এমন ধারণার বশবর্তী হয়ে তাদের ওপর হামলা চালানো হয়। কিন্তু কেউ তাদের আগুন দিতে দেখেনি। শুধুমাত্র সন্দেহের বশে ওই শ্রমিকদের ওপর হামলা চালিয়েছেন হিন্দু সম্প্রদায়ের একটি গোষ্ঠী। হামলায় আশরাফুল (২১) ও আশাদুল (১৫) নামে আপন দুই ভাই নিহত ও অন্তত ৫ জন আহত হয়।