মিলন রায় :: এক অবিশ্বাস্য প্রত্যাবর্তনের গল্প যশোর জেলার অভয়নগর থানার একটি প্রত্যন্ত গ্রামের (ভাঙ্গা গেট,দিয়াপাড়া) ছেলে লিমন। বয়স আনুমানিক ১১ বছর।তার এলাকার একটা ছেলের সাথে মারামারিতে জড়িয়ে পড়ে তার পিতার ভয়ে বাড়ি ছেলে পালিয়ে আসে।তার পিতামাতা তাকে না পেয়ে চিন্তিত হয়ে পড়ে।আত্মীয়স্বজনের বাসায় খোঁজাখুঁজি করে না পেয়ে পরিবার দিশেহারা হয়ে পড়ে।সর্বশেষ তাঁকে যশোর রেলওয়েস্টেশনে দেখতে পাওয়া যায় বলে খবর পেয়ে সেখানে খোঁজাখুঁজি করে।না পেয়ে তাঁরা বিভিন্ন রেলওয়েস্টেশনে খুঁজতে থাকে।খুঁজতে খুঁজতে এক পর্যায়ে খুলনা রেলওয়েস্টেশনে চলে আসে।রেলস্টশনস্থ পুষ্পকানন আশ্রয়কেন্দ্রে চলে আসে।যেখানে অবহেলিত পথশিশুদের ঠিকানা।তার পরিবার পুষ্পকানন আশ্রয়কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা মোঃওলিউল ইসলাম এবং ওই আশ্রয়কেন্দ্রের উপদেষ্টা (ফজলুল বারী মল্লিক)ডাবলু স্যার কে বিষয়টি অবগত করে।মানবতার সৈনিক (ফজলুল বারী মল্লিক) ডাবলু স্যার খুলনা রেলওয়ের সিনিয়র কর্মকর্তা(এসএই)।উনার তত্ত্বাবধানে এবং পুষ্পকানন আশ্রয়কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা মোঃ ওলিউল ইসলামের নেতৃত্বে ওই আশ্রয়কেন্দ্রের অধীনস্থ অবহেলিত শিশুদের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় দীর্ঘ ৫ দিন অক্লান্ত পরিশ্রমের ফসলস্বরুপ দেখা মেলে ওই ছেলেটির।তৎক্ষনাৎ তাকে আশ্রয়কেন্দ্রে নিয়ে এসেই পরিবারকে খবর দেওয়া হয়।ওইদিনই তার পরিবার ছেলেকে পাওয়ার তৃপ্ত বাসনা নিয়ে ছুটে আসে পুষ্পকানন আশ্রয়কেন্দ্রে।ছেলেকে পেয়ে আনন্দে কেঁদে ফেলে তার পিতামাতা।বুকে টেনে নেয় তাদের অমূল্য ধনকে।অবুঝ ছেলেটিকে অনেক বুঝিয়ে তার পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হয়।সকলের মুখমন্ডলে তখন যুদ্ধ জয়ের হাসিমাখা মুখ।ছেলেকে পেয়ে আনন্দের সীমা নেই।আনন্দচিত্তে সকলকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানিয়ে সবাইকে বিদায় জানালো।বিদায় জানানোর মুহুর্তটাও ছিল অশ্রুসিক্ত।সকলে মিলে চেষ্টা না করলে ওই ছেলেটা হয়তো কোনো খারাপ সঙ্গ পেয়ে অপকর্মে লিপ্ত হতো।কিশোর গ্যাং-এর সাথে জড়িয়ে পড়ে নানা অপরাধে লিপ্ত হতো।আল্লাহর অশেষ ইচ্ছায় একটা ছেলের প্রত্যাবর্তন হলো নিজ পরিবারে। ছেলেটাকে পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দিয়ে পুষ্পকানন আশ্রয়কেন্দ্রের সকলে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেললো।তারা যেন ভবিষ্যতে এরকম আরো মানবিক কাজে অবদান রাখতে পারে, সেজন্য সকলের কাছে দোয়া চেয়েছেন।আমরা সকলে যদি এরকম মানুষের পাশে এগিয়ে আসি তবে সমাজে অবহেলিত বা পরিবারহীন কেউ থাকবে না।আসুন,সবাই মিলে একটা সুস্থ -সুন্দর সমাজ গড়ে তুলি।মানব সেবায় নিজেকে বিলিয়ে দিই। “সকলের তরে সকলে আমরা, প্রত্যেকে মোরা পরের তরে”