এইচএম ইমরান মাজহারী: চুরির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করায় একটি চক্র সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অপপ্রচার চালাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন গাজীপুর জেলার কালীগঞ্জ থানার বক্তারপুর ইউনিয়নের -উত্তর খৈকড়া এলাকার বাসিন্দা ভুক্তভোগী মির হোসেন, সাখের, জাকারিয়া, কাদির, মাজাহার, দেলোয়ার, মোশারফ, শহীদ। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকায় চাঞ্চল্যকর অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। সরেজমিনে ঐ এলাকায় গিয়ে জানা যায়, মূলত চোরের ঘটনাকে কেন্দ্র করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এ অপপ্রচার।
এলাকার স্থানীয় বাসিন্দাদের সাথে কথা বলে জানা যায়, চোরের ঘটনাকে ধামাচাপা দিতে একটি স্বার্থন্বেষী মহল প্রতিহিংসাবশত এ অপপ্রচার চালাচ্ছে। এলাকার স্থানীয় বাসিন্দা দেলোয়ার হোসেন জানান, ফেসবুকে এলাকার ছেলেপেলেদের বিরুদ্ধে অপপ্রচার ছড়াচ্ছে শুনেছি যাদের বিরুদ্ধে অপপ্রচার হচ্ছে সেসব ছেলেপেলে এই সবের সাথে একদমই জড়িত না। এগুলো সব ডাহা মিথ্যা কথা, চোরদের সনাক্ত করে দিয়েছে বলে প্রতিহিংসাবশত এসব মিথ্যা কথাগুলো তারা ছড়াচ্ছে। স্থানীয় বাসিন্দা আওয়াল জানান, চোরদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দেওয়ার কারণে এলাকার ভালো ছেলে পেলেদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করছে একটি চক্র। সাড়া এলাকা ঘুরে এসব ছেলেদের বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ পাওয়া যাবে না। তারা অনেক ভদ্র মার্জিত ছেলে। চোরদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করার কারনে একটি মহল এসব মিথ্যা অপপ্রচার চালাচ্ছে। আমরা এর সুষ্ঠু বিচার চাই।
ভুক্তভোগী জাকারিয়া জানান, ” চোরের মার বড় গলা” প্রকৃতপক্ষে এ চোরেরা মাদক ব্যবসায়ের সাথে জড়িত এবং বিভিন্ন সময় তারা চুরি ও মাদক ব্যবসা করে আসছে। নিজেদের অপরাধ ঢাঁকার জন্য আমাদের নামে তারা ফেসবুকে অনলাইনে মিথ্যা অপপ্রচার চালাচ্ছে। তাদের বিরুদ্ধে তথ্যপ্রযুক্তি আইনে মামলার প্রক্রিয়া চলছে। চুরি যাওয়া মেশিনের মালিক বাদী আকিব মোল্লাহ জানান,আজ থেকে প্রায় এক বছর আগে আমার এবং জাকির, দিপু মন্ডল , মোঃ শহীদ, দেলোয়ার, মোঃ আজম আলী, সরোয়ার, তাহের মোল্লাহ, মাইনউদ্দিন মোড়ল তাদের সকলের মোট নয়টি স্যালো মেশিন চুরি হয়েছে। চুরি হওয়ার পরে আমরা মেশিন অনেক খোঁজাখুঁজি করি, পরবর্তীতে মেশিন না পাওয়ায় গাজীপুর জেলার কালীগঞ্জ থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করি। ঘটনার রাতে অর্থাৎ ইং ২৫/০৩/২০২৩ খ্রিঃ তারিখ রাতে খালের পাশে মাছ ধরার কাজে নিয়োজিত ছিল প্রত্যক্ষদর্শী সিজন (২১), পিতা-শুকুর আলী এবং সিপন (২২) পিতা-হিরন খান। মেশিনগুলি চুরি করে নিয়ে যাওয়ার সময় তারা দু’জন দেখতে পায়। প্রত্যক্ষদর্শী সিজন (২১) এবং সিপন (২২) জানায়, চুরির ঘটনার সাথে জড়িত রুবেল(৩৩) এবং মাহাবুব (৩৬) ভয়ভীতি দেখালে এতদিন তারা ঘটনার বিষয়ে চুপ ছিল। পরবর্তীতে ইং-২৫/০১/২০২৪ খ্রিঃ তারিখে প্রত্যক্ষদর্শীদ্বয় আমাদের নিকট চুরির ঘটনাটি জানিয়ে বলে, মাহাবুব,রুবেলসহ চারজন মিলে মেশিন চুরি করেছে।
ভুক্তভোগী মোশারফ জানান, চোরের ঘটনায় থানায় অভিযোগ হলে কালিগঞ্জ থানার এসআই হালিম তদন্তে আসেন, কিন্তু চোরদের বিরুদ্ধে কোন অ্যাকশন না নিয়ে চলে যান। পরে, মাহাবুব আমাদেরকে বলে থানায় মোটা অংকের টাকা দিয়েছি থানা অভিযোগ করে তোরা আমাদের কিছুই করতে পারবি না। এসবের ফল তোরা ঠিক সময় মত পাবি। এর দুদিন পরেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এ ধরনের অপপ্রচার তারা চালাচ্ছে । ভুক্তভোগী আব্দুল কাদের জানান, চোরদের বিষয়ে জানতে পেরে থানায় জানাই এবং এ বিষয়ে স্থানীয় চেয়ারম্যানকে অবহিত করি। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ২নং বিবাদি মাহাবুব এর বোন মানসুরা সাংবাদিকতার পরিচয় দিয়ে আমাদের বিভিন্ন ভয়ভীতি ও হুমকি প্রদান করে।
এছাড়াও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক ও অনলাইনে আমাদের নামে মিথ্যা অপপ্রচার করে। এমনকি তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ না তুলে নিলে আমাদের জীবন অতিষ্ঠ করে তুলবে বলে হুমকি প্রদান করে। আমাদের নামে অপপ্রচার থামাতে মোটা অংকের চাঁদা দাবি করে। বর্তমানে আমাদের সামাজিক মান মর্যাদা হুমকির মুখে আমরা এর সুষ্ঠু বিচার চাই। এ ব্যাপারে স্থানীয় কালীগঞ্জ উপজেলার বক্তারপুর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান আতিকুর রহমান জানান, সেলু মেশিন চুরি সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে স্থানীয়দের মধ্যে একটি ঝামেলা চলছে বলে আমি জানি। যাদের বিরুদ্ধে মাদক, ইভটিজিং সংক্রান্ত নিউজ অনলাইন ফেসবুকে ছড়াচ্ছে তা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। ভুক্তভোগীদের আমি ব্যাক্তিগতভাবে চিনি তারা এসবের সাথে জড়িত নয়। প্রতিহিংসাবশত একটি চক্র এসব গুজব ছড়াচ্ছে।
কালীগঞ্জ থানার এসআই হালিম এ ব্যাপারে জানান, সেলু মেশিন চুরি সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে একটি অভিযোগ আমার কাছে এসেছে। আমি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। কিন্তু চুরির সাথে কে বা কারা জড়িত এ ব্যাপারে কোন সুনির্দিষ্ট সাক্ষী নেই। প্রতিহিংসাপরায়ন হয়ে একপক্ষ আরেক পক্ষকে বিভিন্ন বিষয়ে দোষারোপ করছে। বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় চেয়ারম্যানের সাথে কথা হয়েছে। দু’পক্ষকে ডেকে বিষয়টি সমাধান করা হবে।