মো. মুর্শিকুল আলম, স্টাফ রিপোর্টার, গাজীপুর :: কার্তিক মাস শেষে শীত অনুভূত হচ্ছে। ঘুমোতে গেলে জড়াতে হচ্ছে কাঁথা, ভোরে রাস্তায় বের হলে কুয়াশায় ঘাসের ওপর শিশিরবিন্দু জানান দেয় শীতের আগমনকে। দিনে গরম অনুভব হলেও সন্ধ্যার পর থেকে শীতল হাওয়া আর ভোর রাতে ঘন কুয়াশার হাতছানিই বলে দিচ্ছে শীত। মাঝে মাঝে ঘন কুয়াশার চাদরে ঢাকা পড়ছে ভোরের সকাল। ফলে বেড়েছে শীতে লেপ-তোশক তৈরি কারিগরদের ব্যস্ততা। এছাড়াও শীতের পোশাক বিক্রির জন্য ব্যবসায়ীদের আনাগোনাও বেড়েছে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের বিভিন্ন হাট-বাজারগুলোতে।
সিটি কর্পোরেশনের বিভিন্ন হাট বাজারের দোকানগুলোতে সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, কারিগরদের লেপ তৈরির কর্মব্যস্ততা। কারিগররা কেউ তুলো ধুনছে, কেউবা ব্যস্ত নতুন বা পুরাতন লেপ-তোশক সেলাইয়ের কাজে, কেউবা লেপে হরেকরকম ডিজাইন ফুটিয়ে তুলছেন।
গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের গাজীপুরা এলাকার বাসিন্দা জায়েদা আক্তার বলেন, পুরোনো লেপ নতুন করে মেরামত করতে এসেছি। প্রয়োজনে আরও কিছু তুলা দিয়ে ঠিক করে নেব।
আরেক বাসিন্দা মো. আব্দুল হামিদ বলেন, একটি লেপের অর্ডার দিয়েছি। এ ছাড়া একটি পুরাতন লেপ মেরামতের জন্য এনেছি।
গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের বড় দেওড়া এলাকার নুসরাত বেডিং এন্ড পর্দা হাউজের মালিক মো. মতিউর রহমান বলেন, শীতের মৌসুম শুরু হলেও লেপ-তোশক কারিগরা খুশি নেই। কারণ বাজারের সবকিছুর দাম বেড়েছে সেই সঙ্গে লেপ-তোশকের কাপড় এবং তুলার দামও বেড়েছে। যে কারণে মানুষের নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য কিনতেই হিমসিম খাচ্ছেন। সারাদিনে ৪শ’ থেকে ৫শ’ টাকা মজুরি উঠানো খুবই কষ্টকর।
গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের টঙ্গীর মিলগেইট এলাকার ব্যবসায়ী মো. হানিফ মিয়া বলেন, ‘মানুষের হাতে টাকা-পয়সা নেই বলে শীত শুরু হলেও লেপ-তোশক বেচা-কেনা এখনও শুরু হয়নি। আশা করছি শীত বাড়লে বেচা-কেনাও কিছুটা বাড়তে পারে। গরমের সময় যে ব্যবসা করেছি এখন সেটুকুও করতে পারছি না। বেশিরভাগ মানুষ পুরাতন লেপ-তোশকের ওপর নির্ভর করছে। নতুন একটি লেপ-তোশক তৈরি করতে ১২শ’ থেকে ১৫শ’ টাকার খরচ হয়।
অপর দোকানের মালিক মো. রেজা মিয়া বলেন, অন্যান্য বছরের তুলনায় এ বছরে ব্যবসা অনেক মন্দা যাচ্ছে। অনেকেই তৈরি শীতের পোশাকের দ্বারস্থ হচ্ছে। তারা ফোম, মাট্রেস ব্যবহারের দিকে ঝুঁকছে। এতে একদিকে যেমন আমরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি পাশাপাশি কারিগররা কর্ম হারিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছে।