May 19, 2024, 2:14 pm

হযরত জুলায়খা রহমতুল্লাহি আলাইহা’র মর্যাদা

Reporter Name
  • আপডেট Monday, May 6, 2024
  • 14 জন দেখেছে
হযরত মাওলানা মুহম্মদ আবুল বাশার :: অলিয়ে কামিল হযরত শায়েখ নিজামুদ্দীন আউলিয়া রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার সম্মানিতা মাতা উনার নাম হযরত জুলায়খা রহমতুল্লাহি আলাইহা। হযরত নিজামুদ্দীন আউলিয়া রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি উনার মাতা রহমতুল্লাহি আলাইহা উনার কথা উল্লেখ করে বলেন, আমার আম্মা একজন উঁচু দরজার বুযুর্গ ছিলেন এবং মহান আল্লাহ পাক উনার সঙ্গে উনার তায়াল্লুক বা সম্পর্ক ছিল গভীর। উনার সামনে কোন কাজ আসার পূর্বেই তিনি সেই বিষয়টি স্বপ্নে দেখতে পেতেন। ফলে সেই কাজটি যথাযথভাবে সমাধা করা উনার জন্য সহজ হতো।হযরত নিজামুদ্দীন আউলিয়া রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেন, এদিকে আমার নিজের অবস্থা ছিল, আমার সম্মানিত মাতার ইন্তেকালের পর যখনই আমার সামনে কোন কাজ এসেছে, আমি আমার মায়ের রওজা শরীফের পাশে দাঁড়িয়ে সেই বিষয়ে নিবেদন করে এসেছি। অতঃপর এক সপ্তাহের মধ্যেই আমার সেই কাজটি সমাধা হয়ে গিয়েছে। এমন ঘটনা খুব কমই হয়েছে যে এক সপ্তাহ পরও আমার সেই কাজটি সমাধা হয়নি।আমার মাতার নিয়ম ছিল, জীবনযাপনের ক্ষেত্রে কোন কাজ সামনে আসলে তিনি পাঁচশত বার দুরূদ শরীফ পাঠ করে মহান আল্লাহ পাক উনার দরবারে উহা প্রার্থনা করতেন। অতঃপর যথাসময় উনার সেই কাজটি সমাধা হয়ে যেত।তিনি আরো বলেন, কোন দিন যদি আমাদের ঘরে খাবারের কোন আয়োজন না থাকত, তবে তিনি বলতেন- “আজ আমরা মহান আল্লাহ পাক উনার মেহমান”। উনার এই আশ্বাসবাণীতে আমরাও পরিপূর্ণ ইতমিনান হয়ে যেতাম। একদিন তিনি আমাদেরকে এইরূপে আশ্বস্ত করার কিছুক্ষণ পরই কোথা হতে এক অপরিচিত ব্যক্তি এসে আমাদের ঘরে একটি আশরাফী (স্বর্ণ মুদ্রা) রেখে গেল। ঐ আশরাফিতে এমনই বরকত হয়েছিল যে, দীর্ঘদিন যাবৎ উহা শেষ না হওয়ার কারণে আমরা অতিষ্ঠ হয়ে পড়লাম। অবশেষে আমরা অপেক্ষা করতে লাগলাম, যেন আম্মাজান পুনরায় বলেন- “আজ আমরা মহান আল্লাহ পাক উনার মেহমান”।কথিত আছে যে, একবার সুলতান কুতুবুদ্দীন বিন সুলতান সালাহুদ্দীন খিলজী হযরত নিজামুদ্দীন আউলিয়া রহমতুল্লাহি আলাইহি উনাকে কোন উপায়ে শাস্তি দিতে চাইলেন। কারণ, সুলতান উনার প্রতি অসন্তুষ্ট ছিলেন। অসন্তোষের কারণ হল- সুলতান তার দুর্গের ভিতর একটি মসজিদ নির্মাণ করেছিলেন। পরে তিনি দেশের সমস্ত উলামা-মাশায়েখকে এই নির্দেশ দিলেন যে, উনারা সকলে যেন প্রতি জুমুয়ার নামায দুর্গের ভিতরের মসজিদে এসে আদায় করেন। হযরত নিজামুদ্দীন আউলিয়া রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার নিকট এই নির্দেশ আসার পর তিনি স্পষ্ট বলে দিলেন, “আমি আমার মহল্লার মসজিদে নামায আদায় করব- ইহাই অধিক যুক্তিযুক্ত। তাছাড়া কোন মসজিদে বিশেষ কোন নামায আদায়ে বাধ্যবাধকতা আরোপ করা ইহা শরীয়তসম্মত নয়”।তাছাড়া এক শ্রেণীর চাটুকার সুলতানকে বুঝাতে চেষ্টা করল যে, নিজামুদ্দীন আউলিয়া রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি আপনার হুকুম অমান্য করে প্রকারান্তরে আপনাকে অপমান করতেছে। এমন জঘন্য অপরাধ কোনক্রমেই প্রশ্রয় দেয়া উচিত নয়।এই অভিযোগ শোনার পর সুলতান উত্তেজিত হলেন। পরে তিনি এক কঠোর নির্দেশনামায় ঘোষণা করলেন- আদেশপ্রাপ্ত কোন ব্যক্তি যদি আগামী মাসের প্রথম তারিখে আমার দরবারে হাজির না হয়, তবে তাকে কঠিন শাস্তি দেয়া হবে।সুলতানের উপরোক্ত নির্দেশনামা শোনার পর হযরত নিজামুদ্দীন আউলিয়া রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি সোজা উনার মাতার কবর যিয়ারতে চলে গেলেন। দোয়া-কালাম পড়ে মাতার রূহে ছাওয়াব রেসানীর পর উনাকে লক্ষ্য করে অভিমানের স্বরে বললেন, “সুলতান আমাকে শাস্তি দেয়ার প্রতিজ্ঞা করেছে। সে যদি এইরূপ অন্যায়ভাবে আমাকে শাস্তি দেয় তবে আমি আর আপনার কবর যিয়ারত করব না”। একথা বলে তিনি বাড়ী ফিরে আসলেন।
মহান আল্লাহ পাক উনার কি শান মুবারক! পরবর্তী জুমুয়ার দিন আসার পূর্বেই সুলতান আততায়ীর (ঘাতকের) হাতে নির্মমভাবে নিহত হয়।

সোস্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই সম্পর্কিত আরও খবর