স্টাফ রিপোর্টার, গাজীপুর :: জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ বাস্তবায়নে স্বাধীনতা পদকপ্রাপ্ত ও গাজীপুর-২ আসনের প্রয়াত সংসদ সদস্য শ্রমিক নেতা মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক শহিদ আহসান উল্লাহ মাস্টার ছিলেন অকুতোভয় সৈনিক। ৭ মে ২০২৪ তারিখ মঙ্গলবার গাজীপুরের হায়দারাবাদে শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টারের বাড়িতে তার ২০তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আলোচনা সভা, মিলাদ মাহফিল ও দোয়া অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন উপাচার্য ড. মশিউর রহমান।
উপাচার্য ড. মশিউর রহমান আরও বলেন, যে মানুষটি জাতিরাষ্ট্র সৃষ্টির মহানায়ক, আমাদের প্রিয় দেশমাতৃকাকে মুক্ত করলেন। যিনি বাংলাদেশ সৃষ্টি করলেন। যিনি বীর বাঙালিকে গেরিলা যোদ্ধায় পরিণত করলেন। যিনি পাকিস্তানি সামরিক বাহিনীকে পোশাক পরিহিত অবস্থায় বাঙালির কাছে আত্মসমর্পণে বাধ্য করেছিলেন। বাঙালির সেই মহানায়ক জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবকে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়। আপনাদের সব ইতিহাস জানা। বঙ্গবন্ধুর দ’ুকন্যা সেদিন বিদেশে থাকায় প্রাণে বেঁচে গেছেন। পাথরচাপা কষ্ট নিয়ে যখন তিনি দেশে ফেরেন। বৃষ্টিস্নাত সেদিনে দেশে ফিরে অঙ্গীকার করেছিলেন প্রিয় দেশমাতৃকাকে এগিয়ে নিয়ে যাবেন। তিনি রক্তাক্ত ৩২ নম্বরে বাবার বাড়িতে যেতে চাইলেন। কিন্তু সেদিন জিয়ার সরকার তাঁকে যেতে দিলেন না। ওখানে দাঁড়িয়ে বঙ্গবন্ধু কন্যা আহাজারি করলেন। স্রষ্টার কাছে প্রার্থনা করলেন। সেদিন তিনি দেখেছিলেন বাঙালির কোনো অধিকার নেই।
জাতীয় বিশ^বিদ্যালয় উপাচার্য বলেন, বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মধ্য দিয়ে দেশের মানুষের ভাত এবং ভোটের অধিকার হরণ করা হয়েছিল। বঙ্গবন্ধু কন্যা সেদিন ভাত এবং ভোটের অধিকার ফিরিয়ে আনার জন্য লড়াইয়ের ডাক দিলেন। আহসান উল্লাহ মাস্টার সেদিন ভাত এবং ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠার লড়াইয়ে নিজেকে উজার করে দিয়ে পরিবার, শ্রমিক তথা এই অঞ্চলের মানুষকে বঞ্চিত করেছেন। কিন্তু বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে করেছেন উচ্চকিত। সে ধারাবাহিকতায় শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টারের সন্তান ডিজিটাল বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা এবং স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে বঙ্গবন্ধু কন্যার পাশে থেকে মানবমুক্তির যুদ্ধে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন।
দেশের বিশিষ্ট এই সমাজচিন্তক বলেন, আহসান উল্লাহ মাস্টারদের মতো একজন মানুষের জন্মের এই হল স্বার্থকতা। তিনি জন্মেছেন। বীরের মত থেকেছেন। মানুষকে ভালোবেসেছেন। মানুষের পক্ষে থেকেছেন। মানুষও তার পক্ষে থেকেছেন। এই থাকা বঙ্গবন্ধুর পক্ষে থাকা। এই থাকা মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে থাকা। এই থাকা বঙ্গবন্ধু কন্যার পক্ষে থাকা। আপনাদের প্রতিটি মানুষ আগামীর পথে বঙ্গবন্ধু, মুক্তিযুদ্ধ এবং বাংলাদেশকে ধারণ করেন তাহলে আগামীর মানবিক পৃথিবীতে এই বাংলাদেশ নেতৃত্ব দেবে, এই প্রিয় দেশমাতৃকা অনন্য শক্তিতে ভরে উঠবে।
আলোচনা সভায় অংশগ্রহণের আগে উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. মশিউর রহমান শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টারের মাজারে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এসময় তার সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন বিশ^বিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মোল্লা মাহফুজ আল-হোসেনসহ জাতীয় বিশ^বিদ্যালয়ের বিভিন্ন দপ্তরের পরিচালক, শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীবৃন্দ। আহসান উল্লাহ মাস্টারের ছেলে সাবেক যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল এমপির সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বস্ত্র ও পাট মন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির নানক। আরো বক্তব্য রাখেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী অ্যাডভোকেট আ ক ম মোজাম্মেল হক এমপি, মেহের আফরোজ চুমকি এমপি, জাতীয় বিশ^বিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. মশিউর রহমান, গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও গাজীপুর উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট মো. আজমত উল্লাহ খান, গাজীপুরের জেলা প্রশাসক আবুল ফাতে মুহাম্মদ সফিকুল ইসলাম, গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো: আতাউল্লা মন্ডল প্রমুখ।