নিজস্ব প্রতিবেদক :: বাগেরহাটে পুলিশের ওপর বোমা হামলার মামলায় নিষিদ্ধ ঘোষিত জেএমবির পাঁচ আসামিকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। আজ বুধবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে বাগেরহাটের অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক ড. মো. আতিকুস সামাদ এ রায় ঘোষণা করেন।
দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের মধ্যে চারজনকে পৃথক ধারায় ছয় বছর এবং একজনকে পৃথক ধারায় পাঁচ বছর কারাদণ্ডাদেশ দেওয়া হয়। এর সঙ্গে আদালত দণ্ডপ্রাপ্ত পাঁচ আসামির প্রত্যেককে ১০ হাজার টাকা করে জরিমানা অনাদায়ে আরো তিন মাস করে বিনাশ্রম কারাদণ্ডের নির্দেশ দেন। রায় ঘোষণার সময় আসামিরা সবাই আদালতের কাঠ গড়ায় উপস্থিত ছিলেন। বোমা হামলার সাত বছর পর রায় ঘোষণার মধ্যে ওই মামলার বিচারকাজ শেষ হলো।
দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের মধ্যে পিরোজপুর জেলার নাজিরপুর উপজেলার রঘুনাথপুর গ্রামের আশরাফুল আলী ফরাজীর ছেলে মো. জহিরুল ইসলাম, সাতক্ষীরা জেলার গড়েরকান্দা গ্রামের মো. জুম্মান আলী সরদারের ছেলে মো. মাকসুদুর রহমান ওরফে তোতা, একই জেলার কাশিমপুর গ্রামের গিয়াস উদ্দিনের ছেলের মো. মোরশেদ আলম, একই জেলার ইটাগাছা গ্রামের আব্দুল করিমের ছেলে মো. সাইফুল ইসলামকে পৃথক তিনটি ধারায় ছয় বছর এবং বাগেরহাট জেলার নাটইখালী গ্রামের সোহরাব হোসেনের ছেলে তরিকুল ইসলাম ওরফে তারেককে পৃথক তিনটি ধারায় পাঁচ বছর কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, গত ২০২১৬ সালের ৩ নভেম্বর গভীর রাতে বাগেরহাট মডেল থানা পুলিশ গোপন সূত্রে জানাতে পারে, বাগেরহাট সদরের দড়াটানা সেতুর নিচে গোবরদিয়া এলাকায় ছয় থেকে সাতজনের একদল জেএমবি সদস্য অবস্থান করছে এবং তারা নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড চালানোর পরিকল্পনা করছে।
খবর পেয়ে পুলিশ সেখানে পৌঁছলে জেএমবি সদস্যরা পুলিশের কাজে বাধা দেয় এবং পুলিশের ওপর বোমা নিক্ষেপ করে। আত্মরক্ষায় পুলিশও গুলি চালায়। এক পর্যায়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে জেএমবির চার সদস্যকে আটক করে। পরে পুলিশ আরো একজনকে আটক করে। ২০১৭ সালের ২১ নভেম্বর বাগেরহাট মডেল থানা পুলিশ তদন্ত করে জেএমবির পাঁচ সদস্যকে আসামি করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করে। ২০১৯ সালের ২ মে আসামিদের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগ গঠন করা হয়।
বাগেরহাট অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের অতিরিক্ত কৌঁসুলি (এপিপি) অ্যাডভোকেট মো. শহিদুজ্জামান জানান, জেএমবির ওই পাঁচ আসামির বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ আদালতে সন্দেহাতিতভাবে প্রমাণিত হয়েছে। আদালতের বিচারক বিভিন্ন ধারায় চার আসামিকে ছয় বছর এবং এক আসামিকে পাঁচ বছর কারাদণ্ড দিয়েছেন। রায় ঘোষণার মধ্য দিয়ে ন্যায়বিচার হয়েছে বলে তিনি জানান।