মো: মুর্শিকুল আলম :: শীতের মৌসুম প্রায় শেষ। তবে এখনো সবজির দাম আকাশছোঁয়া। শিম, বেগুন, আলুর দাম কমেনি ভরা মৌসুমেও। চালের দামও বাড়তি। একবার বাড়লে আর যেন কমতে চায় না। নিত্যপ্রয়োজনীয় সব পণ্যেরই দাম এখন চড়া। বাজারের এমন পরিস্থিতিতে মানুষের নাভিশ্বাস। বিশেষ করে সীমিত আয়ের মানুষেরা দিশেহারা। বরাবরের মতো এবারও দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে রাখার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। চালের গুদামে অভিযানের কথা বলছেন খাদ্যমন্ত্রী। ভ্রাম্যমাণ আদালত অভিযান পরিচালনা করছেও বটে। দুই-এক জায়গায় মন্ত্রী নিজেও অভিযানে হাজির হয়েছেন। কিন্তু দৃশ্যমান কোনো ফল আসছে না। বরং রমজান আসার আগেই প্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বাড়িয়ে দিচ্ছেন ব্যবসায়ীরা।
দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে নিম্ন আয়ের মানুষ। করোনা এবং বৈশ্বিক সংকটে বাংলাদেশে দরিদ্র এবং অতিদরিদ্র মানুষের সংখ্যা ব্যাপক হারে বাড়ছে। এসব মানুষের জন্য সরকার আশু কোনো পদক্ষেপ নিয়েছে বলে এখনও নজরে আসেনি। সাধারণ মানুষের জন্য বিশেষ কর্মসূচি ঘোষণা করে বাজার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। তবে এর আগে সুশাসন এবং জবাবদিহি প্রতিষ্ঠা নিয়ে ভাবতে হবে। সুশাসন না থাকলে কোনো পদক্ষেপ-ই কাজে আসবে না। খোলাবাজারে পণ্য বিক্রির আওতা বাড়ানো দরকার। এখনো খোলাবাজারে পণ্য বিক্রি করা হচ্ছে। মানুষ বাঁচাতে হলে খোলাবাজারে পণ্য বিক্রি বাড়াতে হবে। ন্যূনতম তিন মাস থেকে যতদিন প্রয়োজন ততদিন নিত্যপণ্য বিক্রি করা প্রয়োজন। এতে করে যারা পণ্য মজুত করে কৃত্রিমভাবে সংকট তৈরি করেন তারা শায়েস্তা হয়ে যাবেন। সরকার পণ্যবিক্রি বাড়িয়ে দিলে তারা মজুত করা পণ্য বাজারে ছাড়তে বাধ্য হবেন। নইলে গুদামে পচবে। সবাই আখের গোছাতে ব্যস্ত। মার খায় সাধারণ জনগণ। রিজার্ভ সংকটে টাকার মান কমছে। টাকার মান কমলে মূল্যস্ফীতি হয়। দ্রব্যমূল্য বাড়লে ধনীর ওপর তেমন প্রভাব পড়ে না, আঘাতটা প্রথমে আসে গরিব মানুষের ওপর।
বাজারের এই পরিস্থিতির জন্য দুর্নীতি ও সুশাসনের অভাবকে দায়ী করছেন বিশ্লেষণকরা। তারা বলেন, দুর্নীতিই বাংলাদেশকে লক্ষ্যে পৌঁছাতে দিচ্ছে না। দুর্নীতির কশাঘাত পড়ে প্রথমে সাধারণ মানুষের ওপর। দেশ থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা পাচার হয়ে যাচ্ছে। যে রেমিট্যান্স আসছে, সেই পরিমাণ অর্থ বাইরে পাচার হচ্ছে। হুন্ডির মাধ্যমে দেশের বাইরের এজেন্টরা টাকা পাচারে সহায়তা করছেন। সরকার জানে কীভাবে (পাচার) হচ্ছে। সরকার কিছুই জানে না- এটা বলার সুযোগ নেই। সুশাসন এবং জবাবদিহি না থাকলে সেই সমাজে সব কিছুই বৈধতা পায়। তাই সবাই আখের গোছাতে ব্যস্ত। মার খায় সাধারণ জনগণ। রিজার্ভ সংকটে টাকার মান কমছে। টাকার মান কমলে মূল্যস্ফীতি হয়। দ্রব্যমূল্য বাড়লে ধনীর ওপর তেমন প্রভাব পড়ে না, আঘাতটা প্রথমে আসে গরিব মানুষের ওপর। সহজ হিসাব।