May 1, 2024, 1:21 pm

চলে গেলেন চারণ শিল্পী বীর মুক্তিযোদ্ধা দিলীপ কুমার দে

Reporter Name
  • আপডেট Thursday, April 18, 2024
  • 17 জন দেখেছে

নিজস্ব প্রতিবেদক :: ‘আমি মুক্তিযোদ্ধা হয়ে ভিক্ষা করি না। পেটের দায়ে কণ্ঠ বিক্রি করে চলি।’ দীর্ঘশ্বাস নিয়ে এভাবেই নিজের অসহায়ত্বের কথা বলতেন আজীবন সংগ্রামী বীর মুক্তিযোদ্ধা দিলীপ কুমার দে (৮৫)। গত মঙ্গলবার (১৬ এপ্রিল) রাত ৩ টায় ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। এরপর গতকাল বুধবার (১৭ এপ্রিল) দুপুরে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দিলীপ কুমার দের শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শাহাদাত হুসেইন ও পুলিশের একটি দল শ্মশান প্রাঙ্গণে তাঁকে রাষ্ট্রীয় সম্মান জানান। এসময় তাঁর কফিনে ফুলেল শ্রদ্ধা জানান ইউএনও। চারণ শিল্পী হিসেবে খ্যাত দিলীপ কুমারের বাড়ি টাঙ্গাইলের কালিহাতী উপজেলার বাগুটিয়া গ্রামে। মৃত্যুকালে দিলীপ কুমার দুই ছেলে, দুই মেয়ে ও নাতি-নাতনিসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।
অভাবী মুক্তিযোদ্ধা দিলীপ কুমার সরকারি ভাতা দিয়ে সংসার চালাতে পারতেন না। ফলে প্রায়ই ঋণগ্রস্থ ছিলেন। তাই কিস্তির টাকা পরিশোধের জন্য বৃদ্ধ বয়সেও হাট-বাজার, স্কুল-কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় ও বাসস্ট্যান্ডে মানুষকে গান শুনিয়ে মুগ্ধ করে আয় করতেন।
শ্রোতারা খুশি হয়ে যে যা দিতো তাই নিতেন। তার ব্যবহারের আপ্লুত হয়ে পড়তেন সবাই। তিনি বলতেন, ‘মুক্তিযোদ্ধা হয়ে আমি ভিক্ষা করি না। পেটের দায়ে কণ্ঠ বিক্রি করে চলি।’ তার অসাধারণ গানের কণ্ঠ ছিল।
দিলীপ মুক্তিযুদ্ধে ১১ নম্বর সেক্টরে কর্নেল তাহেরের অধীনে ছিলেন। তিনি বলতেন, ‘যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করেছি, এখন জীবিকার যুদ্ধে রাস্তায় রাস্তায় গান করি। সরকারিভাবে তাকে থাকার জন্য ঘর করে দেওয়া হয়।’
কালিহাতী উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার মিজানুর রহমান মজনু বলেন, দিলীপ দাদা একজন ভালো মনের মানুষ ছিলেন। অভাবের সংসারে প্রয়োজন মেটাতে শেষ বয়সেও তিনি হাটে বাজারে গান করতেন। তাঁর কথা ভুলবার মতো নয়।
শেষ বারের মতো একজন মুক্তিযোদ্ধাকে এক পলক দেখতে ভিড় করেছিলেন অনেকে। সেখানে উপস্থিত হয়েছিলেন কালিহাতী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মনিরুজ্জামান শেখ, মুক্তিযুদ্ধকালীন কম্পানি কমান্ডার কাজী আশরাফ হুমায়ুন বাঙাল, উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার মিজানুর রহমান মজনু, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন মোল্লা, কালিহাতী পৌরসভার মেয়র মোহাম্মদ নুরুন্নবী সরকার ও উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা আব্দুল ছালেকসহ বীর মুক্তিযোদ্ধারা।

সোস্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই সম্পর্কিত আরও খবর