May 20, 2024, 12:41 pm

চরমোনাই পীরের সংলাপে বক্তারা সুষ্ঠু নির্বাচনে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের তাগিদ

Reporter Name
  • আপডেট Wednesday, November 29, 2023
  • 34 জন দেখেছে

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা :: নির্বাচন বর্জন করা চরমোনাই পীরের নেতৃত্বাধীন ইসলামী আন্দোলনের সংলাপে বিএনপি ছাড়াও ডান ও বামপন্থি বিভিন্ন দলের নেতা অংশ নিয়ে তপশিল বাতিল করে সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের তাগিদ দিয়েছেন। সরকারের পদত্যাগ এবং রাষ্ট্র মেরামতে ঐক্যের কথাও বলেছেন তারা। মঙ্গলবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে এ সংলাপে সভাপতিত্ব করা ইসলামী আন্দোলনের আমির তথা চরমোনাই পীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম ১১ দফা তুলে ধরে তিন প্রস্তাব দেন– সব রাজনৈতিক দলকে নির্বাচন বর্জনের আহ্বান, জালেম সরকারের সঙ্গে হাত মেলাবেন না ও স্বাধীনতার চেতনায় বিশ্বাসীরা নীলনকশার নির্বাচনে যাবেন না।
সংলাপে বিএনপি, এলডিপি, জাতীয় পার্টি (কাজী জাফর), জাগপা, এবি পার্টি, গণঅধিকার পরিষদের উভয় অংশের মতো মধ্যপন্থি দলগুলো অংশ নেয়। ছিল জেএসডি, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, গণসংহতি আন্দোলন, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন, ভাসানী পরিষদের মতো বাম ধারার দল। ধর্মভিত্তিক দলের মধ্যে খেলাফত মজলিস ছিল। জামায়াতে ইসলামী না থাকলেও দলটির সমর্থিত সম্মিলিত ওলামা মাশায়েখ পরিষদের প্রতিনিধি ছিলেন। যোগ দেয় ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) একাংশ।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেছেন, সরকারের জুলুম-নির্যাতনে বাম, ডান সবাই আজ এক কাতারে চলে এসেছে। মজলুমের ঐক্য হয়েছে। নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচনের দাবিতে জাতীয় ঐক্য গড়ে উঠেছে বলে দাবি করেন জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার। তিনি বলেছেন, তিন বড় রাজনৈতিক দল বিএনপি, ইসলামী আন্দোলন ও জামায়াতে ইসলামী একসঙ্গে লড়াইয়ের ডাক দিলে জনগণ সরকারের বিপক্ষে নেমে আসবে।
প্রথমবারের মতো ধর্মভিত্তিক দলের সভায় যোগ দেওয়া বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, ঘরে আগুন লাগলে নেভাতে পাড়া-প্রতিবেশীকেও ডাকতে হয়। দেশে আগুন লেগেছে বলেই প্রগতিশীল, গণতান্ত্রিক ও ইসলামী ধারার সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। ইসলামী আন্দোলনের বিষয়ে সংশয় দূর হয়েছে। কাকের মাংস কাকে খায় না। আওয়ামী লীগ নিজ দলের প্রার্থীদের ডামি প্রার্থী দিয়ে কাকের গোশত খাওয়া শুরু করেছে। ভোট চোরদের পক্ষে থাকায় ভারতের বিরুদ্ধে জনমত সৃষ্টি হয়েছে।
এবি পার্টির সদস্য সচিব মজিবুর রহমান মঞ্জু বলেন, লাভের জন্য ও ভয়ে ঐক্য হয়। মানুষকে তার অধিকার হারানোর বিষয়টি হয়তো বোঝানো যাচ্ছে না। বোঝাতে পারলেই তারা রাস্তায় নামবে। এক সপ্তাহের খোরাকি নিয়ে রাস্তায় নামতে হবে।
গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর বলেন, ২০১৪ সালে নির্বাচন প্রতিহত করা যায়নি। এ সরকারের সঙ্গে সংলাপে কিছু হবে না। দল-মত নির্বিশেষে রাজপথে নামতে হবে। নইলে কিছুই হবে না।
সংলাপে লিখিত বক্তব্যে তপশিল বাতিল ও বিরোধী দলের নেতাকর্মীকে মুক্তি দিয়ে নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি, সংসদ ভেঙে দিয়ে জাতীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন এবং সখ্যানুপাতিক নির্বাচনের প্রস্তাব দেন চরমোনাই পীর। তিনি বলেন, একতরফা নির্বাচনে বিরোধী মতকে স্তব্ধ করতে সরকার নানামুখী ষড়যন্ত্র করছে। বিরোধী দল চরম দমন-পীড়নের মুখোমুখি। শত শত মিথ্যা ও গায়েবি মামলা দেওয়া হচ্ছে। বিরোধী দলের মৃত নেতাকর্মীকেও কারাদণ্ড দেওয়া হচ্ছে। সংলাপ শেষে রেজাউল করীম জানান, সবার থেকে আসা মতামত নিয়ে কর্মসূচি ঠিক করবে তাঁর দল।
ইসলামী আন্দোলনের যুগ্ম মহাসচিব গাজী আতাউর রহমানের সঞ্চালনায় সংলাপে বক্তৃতা করেন সম্মিলিত ওলামা মাশায়েখ পরিষদের সভাপতি তথা জামায়াতের কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য খলিলুর রহমান মাদানী, পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক আবদুল লতিফ মাসুম, গণফোরামের একাংশের সভাপতি সুব্রত চৌধুরী, বিএনপির আইনবিষয়ক সম্পাদক কায়সার কামাল, আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি গোলাম মওলা রনি, এলডিপি মহাসচিব শাহাদত হোসেন, গণতন্ত্র মঞ্চের সমন্বয়ক ও জেএসডির সাধারণ সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী, নাগরিক ঐক্যের সাধারণ সম্পাদক শহীদুল্লাহ কায়সার, এনডিপির চেয়ারম্যান কে এম আবু তাহের, বিএফইউজে সভাপতি এম আবদুল্লাহ, খেলাফত মজলিসের যুগ্ম মহাসচিব মোস্তাফিজুর রহমান।
ইসলামী আন্দোলনের সিনিয়র নায়েবে আমির সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করিম, প্রেসিডিয়াম সদস্য সৈয়দ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল মাদানী, মহাসচিব ইউনুস আহমাদসহ জ্যেষ্ঠ নেতারাও বক্তৃতা করেন। তারা বলেছেন, ‘ডামি প্রার্থী’ দেওয়ার নামে আওয়ামী লীগ পাতানো নির্বাচন করতে যাচ্ছে। স্বাধীনতা, মানবাধিকার ও গণতন্ত্র রক্ষায় বাম-ডান সব দল এক টেবিলে বসতে পারা অনেক বড় বিষয়।

সোস্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই সম্পর্কিত আরও খবর