May 10, 2024, 1:19 am

গাজীপুরে অধিকাংশ কারখানা বন্ধ : শ্রমিকদের বিক্ষোভ

Reporter Name
  • আপডেট Tuesday, October 31, 2023
  • 54 জন দেখেছে

স্টাফ রিপোর্টার, গাজীপুর :: গাজীপুরে গত সাত দিন ধরে শ্রমিকদের অসন্তোষের কারণে মঙ্গলবার থেকে অধিকাংশ কারখানা বন্ধ ঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষ। কারখানা বন্ধ থাকলেও মঙ্গলবার সকালে গাজীপুরের বিভিন্ন এলাকায় শ্রমিকরা মহাসড়কে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেছে। এতে ঢাকা টাঙ্গাইল মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ আছে।

শিল্প পুলিশ ও শ্রমিকদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, চলতি মাসের ২৩ অক্টোবর থেকে কালিয়াকৈর উপজেলার মৌচাক ও তেলিচালা এলাকার কয়েকটি কারখানার শ্রমিকরা বেতন বাড়ানোর দাবিতে অবরোধ শুরু করে। সেখান থেকে পর্যায়ক্রমে শ্রমিক বিক্ষোভ গাজীপুর মহানগরীর কোনাবাড়ী নাওজোর, ভোগরা, চান্দনা চৌরাস্তাসহ আশপাশের এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে। মঙ্গলবার সকাল থেকে শ্রমিকরা মৌচাক ও তেলিচালা এলাকায় মহাসড়কে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করে। এছাড়া গাজীপুর মহানগরের চান্দরা চান্দনা চৌরাস্তায় এলাকায় শ্রমিকদের বিক্ষোভ করতে দেখা গেছে। অবরোধের মধ্যে সল্প পরিমাণে যানবাহন চলাচল করলেও শ্রমিকদের আন্দোলনের কারণে সকাল সাড়ে আটটা থেকে সেগুলো চলাচল বন্ধ রয়েছে। বেতন বাড়ানোর দাবিতে শ্রমিকরা নানা ধরনের স্লোগান দিচ্ছেন। অপরদিকে গত সোমবার গাজীপুরের মহানগরীর কোনাবাড়ী, ভওগড়আ, বাসন সড়ক, চান্দনা চৌরাস্তা এলাকায় প্রায় সারাদিনই শ্রমিক বিক্ষোভ চলায় মঙ্গলবার অধিকাংশ কারখানা বন্ধ ঘোষণা করে কর্তৃপক্ষ।

মঙ্গলবার সকালে কোনাবাড়ি এলাকায় দেখা গেছে, কোনাবাড়ী এলাকার সবচেয়ে বড় কারখানা তুসুকা গ্রুপের প্রধান ফটকে বড় একটি ব্যানার ঝুলছে । তাতে লেখা রয়েছে অনিবার্য কারণবশত কারখানার সকল কার্যক্রম আগামী ২ অক্টোবর পর্যন্ত বন্ধ থাকবে। একই এলাকার এম এম নেটওয়ার্ক কারখানা বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে শুধু মঙ্গলবারের জন্য। এছাড়া আরো বেশ কয়েকটি কারখানার সামনে কারখানা বন্ধের নোটিশ দেখা গেছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কারখানার এক কর্মকর্তা বলেন, শ্রমিক আন্দোলনের কারণে কারখানার সাময়িকভাবে বন্ধ করা হয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলেই খুলে দেয়া হবে।

গাজীপুর মহানগরীর কোনাবাড়ি এলাকার তুসুকা গ্রুপের নিটিং সেকশনের শ্রমিক শরিফুল ইসলাম বলেন, আমাদের বেতন দেয়া হয় ৮ থেকে ১০ হাজার টাকা। এই টাকায় আমাদের সংসার চলছে না। ঘরভাড়া দেয়া পর যা থাকে তাই কোনো ভাবে বেচে আছি। এখন আমাদের দাবি সর্বনিন্ম বেতন ২৩ হাজার টাকা দিতে হবে। দাবি পুরন না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলতে থাকবে।

জাতীয় গার্মেন্টস শ্রমিক জোটের কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক মো. আশরাফুজ্জামান বলেন, শ্রমিকদের মুজুরি বোর্ড নিয়ে সরকার কাজ করছে। এখনও সেটি চুরান্ত হয়নি। যখন মুজুরি চুরান্ত করে ঘাষনা দেওয়া হবে তখন আমরা সিদ্ধান্ত নিব সেটি মানব কি মানব না। কিছু উশৃখল লোক শ্রমিকদের উসকানি দিয়ে ননইস্যুকে ইস্যু বানিয়ে পরিস্থিতি অস্থিতিশীল করে তুলছে।

গাজীপুরের বাসন থানার ওসি আবু সিদ্দিক বলেন, শ্রমিকরা বিক্ষিপ্তভাবে বিভিন্ন স্থানে অবস্থান নিয়ে মিছিল করছে। আজকে অধিকাংশ কারখানা বন্ধ থাকায় শ্রমিকদের সংখ্যা কিছুটা কম। তাদের বুঝিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা চালিয়ে যাওয়া হচ্ছে।

গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার মৌচাক বাজার এলাকায় শ্রমিকরা বিক্ষোভ শুরু করে এবং মহাসড়কে ১০-১২ টি যানবাহন ভাঙচুর করে। এসময়ে শিল্প পুলিশ ও থানা পুলিশ তাদের নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করে। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে শতশত শ্রমিক পুলিশকে ধাওয়া করে। পুলিশ আত্মরক্ষার্থে মৌচাক বাজার এলাকায় অবস্থিত কালিয়াকৈর থানাধীন পুলিশ ফাঁড়িতে অবস্থান নেয়। এ সময়ে শ্রমিকরা উত্তেজিত হয়ে পুলিশ ফাঁড়িতে হামলা চালায়। ফাড়ীর গেট, অফিসের গ্লাস এবং সাইনবোর ভাঙচুর করে। কালিয়াকৈরে থানার ওসি আকবর আলী খান জানান, কয়েক হাজার শ্রমিক মৌচাক পুলিশ ফাঁড়ির সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করছে। তাদের নিয়ন্ত্রণ করতে চেষ্টা চালিয়ে যাওয়া হচ্ছে।

সোস্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই সম্পর্কিত আরও খবর