May 19, 2024, 5:50 pm

মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে করা অর্ধেকেরও বেশি মামলার আসামিরা খালাস পেয়ে যাচ্ছেন

Reporter Name
  • আপডেট Tuesday, May 7, 2024
  • 17 জন দেখেছে

দৈনিক বিজয়বাংলা ডেস্ক :: মাদকের বিরুদ্ধে সরকার ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি নিলেও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে করা অর্ধেকেরও বেশি মামলার আসামিরা খালাস পেয়ে যাচ্ছেন। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, তদন্ত, সাক্ষ্যপ্রমাণের দুর্বলতাই এর কারণ; যাতে দায় আছে পুলিশেরও। এ জন্য পুলিশ সদর দপ্তর মাদক মামলায় সাজার হার বাড়াতে পদক্ষেপ নিতে পুলিশ কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দিয়েছে। কোনো পুলিশ সদস্য সাক্ষ্য দিতে না গেলে তাঁর বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। সদর দপ্তরের নির্দেশনার পর ডিএমপি কমিশনারও এ বিষয়ে মহানগরের ৫০ থানার কর্মকর্তাদের তদন্তে ফাঁক না রাখার এবং সাক্ষ্যপ্রমাণ নিশ্চিত করার নির্দেশনা দিয়ে চিঠি দিয়েছেন।
পরিসংখ্যান বলছে, ২০১০ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত ১৩ বছরে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে ১০ লাখ ৫৬ হাজার ৫৪০ মামলা হয়েছে। এসব মামলায় আসামি করা হয়েছে ১৩ লাখ ৪৩ হাজার ৫২১ জনকে। একই সময়ে বিভিন্ন আদালতে ৩৪ হাজার ৪৫৭টি মামলার রায় হয়েছে।এর মধ্যে ১৬ হাজার ৮১২টি মামলায় সাজা হয়েছে। আসামিরা খালাস পেয়েছে ১৭ হাজার ৬৪৫টি মামলায়। এই ৩৪ হাজার ৪৫৭টি মামলায় আসামি ছিল ৩৭ হাজার ৬৭ জন। তাদের মধ্যে সাজা হয়েছে ১৭ হাজার ৪২৪ জনের। খালাস পেয়েছে ১৯ হাজার ৬৪৩ জন।
সাজার হার কম হওয়ার কারণ সম্পর্কে ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালতের অতিরিক্ত সরকারি কৌঁসুলি তাপস কুমার পাল বলেন, মাদক মামলার জব্দ তালিকার সাক্ষী অনেক গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু সাক্ষীদের অনেকে আদালতে আসতে অনীহা দেখান। আবার অনেক মামলায় সাক্ষীদের সঠিক নাম-ঠিকানা না থাকায় আদালতে হাজির করা যায় না। আবার যাঁরা আসেন, তাঁদের কেউ কেউ আসামিপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করে আসামির পক্ষে কথা বলেন। এসব কারণে মূলত মামলা থেকে আসামিরা খালাস পায়। আবার অনেক সময় পুলিশ আসামিকে আদালতে হাজির করতে ব্যর্থ হয়।
পুলিশ সূত্র জানায়, চলতি বছর পুলিশ সদর দপ্তরের প্রথম ত্রৈমাসিক সভায় মাদক মামলার আসামিদের সর্বোচ্চ সাজা নিশ্চিত করার বিষয়ে আলোচনা হয়। সভায় বলা হয়, পুলিশ সদস্য সাক্ষীর পাশাপাশি অন্য সাক্ষীদেরও আদালতে উপস্থিতি নিশ্চিত করতে হবে। জব্দ তালিকার প্রকৃত সময়, তারিখ ও ঘটনাস্থলের সঙ্গে মিল রেখে মামলা করতে হবে। এজাহার দায়েরকারী কর্মকর্তাকে ছাড়া অন্য কর্মকর্তাকে দিয়ে মামলার তদন্ত করাতে হবে। জব্দ আলামত সংখ্যায় নয়, ওজনে সঠিক পরিমাপ করতে হবে। সাক্ষী পুলিশ সদস্য আদালতে অনুপস্থিত থাকলে তাঁর বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নিতে হবে। মামলাগুলো ধাপে ধাপে আলাদা কর্মকর্তা দিয়ে তদারকি করালে সাজার হার বৃদ্ধি নিশ্চিত করা যাবে।
জানতে চাইলে পুলিশ সদর দপ্তরের উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি-অপারেশনস) আনোয়ার হোসেন বলেন, ছোট ছোট কিছু বিষয়ের জন্য মাদক মামলার আসামিরা খালাস পেয়ে যাচ্ছে। প্রকৃত কোনো আসামি যেন সাজা থেকে মাফ না পায়, সে জন্য সংশ্লিষ্ট তদন্তকারীদের দিকনির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
জানতে চাইলে ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান বলেন, মাদক মামলায় আসামিদের সাজার হার বাড়ানোর চেষ্টা চলছে। মাদক মামলার আসামিদের কারাগারে আটক রাখতে পারলে মাদকের সরবরাহ কমে যাবে। ব্যবসা ছোট হয়ে আসবে। তাই তদন্তে যেন কোনো ফাঁক না থাকে, পুলিশ কর্মকর্তারা সেই চেষ্টা করছেন।

সোস্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই সম্পর্কিত আরও খবর