নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল :: বরিশাল জেলার দুটি ও বরগুনার একটি আসন থেকে জাতীয় পার্টির দুই সংসদ সদস্য প্রার্থী সরে দাঁড়িয়েছেন। আজ রবিবার (৩১ ডিসেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টায় বরিশাল নগরীর একটি কমিউনিটি সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এ ঘোষণা দেন তারা।
তারা হলেন- বরিশাল-২ (বানারীপাড়া-উজিরপুর) ও বরিশাল-৫ (সদর) আসনের প্রার্থী জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা প্রকৌশলী ইকবাল হোসেন তাপস এবং বরগুনা-১ (আমতলী-তালতলী) আসনের প্রার্থী খলিলুর রহমান।
সংবাদ সম্মেলনে ইকবাল হোসেন তাপস দাবি করেন, ‘নির্বাচন কমিশন সুষ্ঠু নির্বাচন উপহার দিতে বদ্ধ পরিকর। কিন্তু তাদের আচরণে মনে হচ্ছে তারা সরকার কর্তৃক নিয়ন্ত্রিত। সরকার কিছু রাজনৈতিক দলকে বরাদ্দ ঘুষ দিয়ে নির্বাচনি বৈতরণী পার হতে চাচ্ছে। সবকিছু মিলিয়ে আমার কাছে মনে হচ্ছে ৭ জানুয়ারি প্রহসনের নির্বাচন হতে যাচ্ছে। যে নির্বাচনে সাধারণ মানুষের কোনও সংশ্লিষ্টতা নেই। নির্বাচনে রয়েছে একটি দল আর সেই দলের লেজুড়ভিত্তিক কিছু মানুষই এ নির্বাচন অংশগ্রহণ করছে। সার্বিক বিবেচনায় আগামী ৭ জানুয়ারির নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’
তাপস বলেন, ‘জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান পরিস্থিতির শিকার। সেই কারণেই তিনি এ নির্বাচনে অংশ নিতে বাধ্য হয়েছেন কি না তা প্রশ্নবিদ্ধ। যা সাধারণ মানুষের মনে ঘুরপাক খাচ্ছে। বরিশালের দুটি আসনের নেতাকর্মীদের সঙ্গে আলাপ করে এবং দুটির বাসিন্দাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এ নির্বাচন থেকে আমি (তাপস) সরে দাঁড়ালাম।’
একই মঞ্চে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেন বরগুনা-১ আসনের জাতীয় পার্টির প্রার্থী খলিলুর রহমান। তিনি বলেন, ‘প্রতীক বরাদ্দের পর থেকে নির্বাচনে প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে আসছিলাম। কিন্তু তারপরও নির্বাচন থেকে সরে যেতে বাধ্য করলো- যা কষ্টকর। সরকার দলীয় নাটকে আমাদের বিভ্রান্ত করায় নির্বাচন থেকে সরে যেতে হলো। আজ থেকে বরগুনা-১ আসনের নির্বাচন থেকে আমি সরে দাঁড়ালাম। কোনোভাবেই নির্বাচন সুষ্ঠু হবে না। আর নির্বাচন সুষ্ঠু হবে কিনা তা যারা নির্বাচনে আছেন তারা ৭ জানুয়ারি দেখতে পাবেন।’
সংবাদ সম্মেলনের শুরুতেই জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা অধ্যাপক মহসিন উল ইসলাম হাবুল বলেন, ‘জাতীয় পার্টি একটি নির্বাচনমুখী দল। বিগত দিনের সব নির্বাচনে জাতীয় পার্টি অংশগ্রহণ করেছে। সর্বশেষ বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনে প্রকৌশলী ইকবাল হোসেন তাপস মেয়র প্রার্থী হয়েছিলেন। সেই সময় বর্তমান নির্বাচন কমিশন সুষ্ঠু নির্বাচনের ভরসা দিলেও নির্বাচনে ব্যাপক কারচুপির অভিযোগ তোলেন তিনি। ওই সময় সরকারি দলের প্রার্থীকে নির্বাচিত করতে প্রশাসন কেন্দ্রে অপর প্রার্থীদের কাউকে দাঁড়াতে পর্যন্ত দেয়নি। এরপরও দলের সিদ্ধান্তের কারণে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে প্রকৌশলী ইকবাল হোসেন তাপসকে দুটি আসনে প্রার্থী করা হয়। প্রতীক বরাদ্দের পর থেকে দুটি আসনের নেতাকর্মীরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে জরিপ করে দেখেছেন ভোটাররা ভাগাভাগির নির্বাচনে আগ্রহী নয়।’ তাছাড়া দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনকে একটি নাটক উল্লেখ করে তিনি দাবি করেন, ‘এ নির্বাচনের যারা নির্বাচিত হবেন সবকিছু ঠিক হয়ে আছে, শুধু ঘোষণার অপেক্ষা। এ কারণে বরিশালের দুটি আসনের নির্বাচন থেকে ইকবাল হোসেন সরে দাঁড়িয়েছেন।’ সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বরিশাল এবং বানারীপাড়া ও উজিরপুরের জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীরা।