May 15, 2024, 2:30 pm

কালীগঞ্জে মালচিং পদ্ধতিতে আগাম ও উচ্চ ফলনশীল জাতের টমেটো ফলনে খুশি কৃষক

Reporter Name
  • আপডেট Monday, April 29, 2024
  • 17 জন দেখেছে

মুর্শিকুল আলম, স্টাফ রিপোর্টার, গাজীপুর:: গাজীপুর জেলার কালীগঞ্জ উপজেলার বাহাদুরসাদী ইউনিয়নের দক্ষিণবাগ গ্রামের বাসিন্দা কৃষক মো: ফিরোজ মিয়া। তিনি প্রতি বছরই বিভিন্ন জাতের সবজি চাষ করেন। প্রতি বছরের ন্যায় এবার এই প্রথম মালচিং পদ্ধতিতে আগাম ও উচ্চ ফলনশীল জাতের টমেটো চাষ করেছেন। এতেই সাফল্য এসেছে। ইতোমধ্যে তিনি লক্ষাধিক টাকার এই সবজি বাজারে বিক্রি করেছেন। জমিতে থাকা বাকি টমেটো বিক্রি করে আরও লক্ষাধিক টাকা লাভবান হওয়ার আশা করছেন ফিরোজ মিয়া।
এ বিষয়ে ফিরোজ মিয়া জানান, উন্নত জাত, সঠিক পরিচর্যা ও কৃষি অফিসের আন্তরিকতা থাকলে কৃষি কাজ করে ভাগ্য বদল সম্ভব। আগামীতে এই উচ্চ ফলনশীল জাতের টমেটো চাষ করবেন বলে জানিয়েছেন, একই গ্রামের অপর কৃষক দুলাল মিয়া, মিজান মিয়া ও মাসুম মিয়া।
সরেজমিন দেখা যায়, পরিত্যক্ত অনাবাদি জমিতে সামার টমেটোর চাষ করা হয়েছে। মালচিং পেপার ব্যবহার করায় আগাছা নেই জমিতে। ফলে, টমেটো গাছগুলো বেশ পরিপক্ব হয়েছে। প্রায় প্রতিটি গাছে থোকায় থোকায় ঝুলতে দেখা গেছে কাঁচা-পাকা টমেটো।
জানা গেছে, উচ্চ ফলনশীল জাতের টমেটো খেতে সুস্বাদু হওয়ায় বাজারে ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। দামও ভালো পাওয়া যায়। কৃষক ফিরোজ মিয়া পরীক্ষামূলকভাবে প্রথমবারের মতো এক বিঘা জমিতে মালচিং পদ্ধতিতে সামার টমেটো চাষ করে সাফল্য পেয়েছেন। অর্থনৈতিক স্বাবলম্বী হওয়ার আশায় তিনি এই কৃষি পদ্ধতি ব্যবহার করেন। ফিরোজ টমেটোর চারাগুলো উপজেলা কৃষি অফিসের সহায়তায় সংগ্রহ করেন। চারা রোপণের ৪৫দিন অতিবাহিত হওয়ার আগেই গাছে ফুল ও ফল আসায় খুবই খুশি তিনি।
কৃষক ফিরোজ জানান, এক বিঘা জমিতে পরীক্ষামূলকভাবে সামার টমেটোর চাষ করেছেন। মালচিং পেপার ছাড়াও পোকামাকড় আক্রমণ থেকে রক্ষা পেতে ইয়েলো ট্রেপ, চেরানং, গাছের গঠন ঠিক রাখতে বাঁশের খুঁটি, রশি, সুতা, আবহাওয়া নিয়ন্ত্রণে নেট মাচা ব্যবহার করেছেন তিনি। এ কাজে তার খরচ হয়েছে প্রায় ১ লাখ টাকা। ফলন দেখে খরচের কয়েকগুণ টাকা তিনি লাভের প্রত্যাশা করছেন। শীতকালীন সবজি হিসেবে বেশ পরিচিত টমেটো। শীতের পরিবর্তে বর্তমানে গ্রীষ্মে বর্ষা মৌসুমেও টমেটো চাষের সম্ভাবনা উঁকি দিচ্ছে।
উপজেলার বাহাদুরসাদী ব্লকের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা জান্নাতুল ফেরদৌস আসমা জানান, জমিকে উত্তমভাবে তৈরি করে প্রয়োজনীয় জৈব ও রাসায়নিক সার মিশিয়ে বেড তৈরি করে সেখানে বীজ রোপণ করতে হয়। তারপর সেই বেডগুলো মালচিং পেপার দিয়ে ঢেকে দিতে হয়।
উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবীদ ফারজানা তাসলিম বলেন, মালচিং পদ্ধতিতে উচ্চ ফলনশীল এই টমেটো জাতটির ফলনও ভালো দেয় এবং বাজারে এটির চাহিদা ও দাম দুটি বেশি। যে জমিটিতে এই টমেটো চাষ করা হয়েছে সেটি ছিল পতিত। প্রথমবারের মতো এই জমিতে মালচিং পদ্ধতিতে টমেটো চাষ করে বাজিমাত করেছেন স্থানীয় কৃষক ফিরোজ। তাকে উপজেলা কৃষি অফিস থেকে যথেষ্ট সহযোগিতা করা হয়েছে। গ্রীষ্ম ও বর্ষা মৌসুমে চাষের সম্ভাবনাকে কাজে লাগিয়ে একদিকে যেমন অসময়ে বাজারে টমেটোর সংকট মিটানো যাবে, তেমনি কৃষকও আর্থিকভাবে লাভবান হবেন। এখন কৃষক ফিরোজ মিয়াকে দেখে আশপাশের অনেকেই এই উচ্চ ফলনশীল জাতের টমেটো চাষে উদ্ধুদ্ধ হচ্ছেন।

সোস্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই সম্পর্কিত আরও খবর