দৈনিক বিজয়বাংলা ডেস্ক :: সড়ক দুর্ঘটনায় চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চুয়েট) দুই ছাত্র নিহত হওয়ার ঘটনায় চতুর্থ দিনের মতো আজও সড়ক অবরোধ করে আন্দোলন করেছেন শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের প্রেক্ষিতে একাডেমিক ক্লাস ও পরীক্ষা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। আজ বৃহস্পতিবার বিকেল চারটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) অধ্যাপক ড. শেখ মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
এদিন সকাল থেকে চুয়েট ক্যাম্পাসের সামনে কাপ্তাই সড়কে আন্দোলন করেন শিক্ষার্থীরা। দুপুর সাড়ে ১২টায়, শিক্ষার্থীরা একটি প্রেস ব্রিফিং করে তাদের দাবিসমূহ তুলে ধরেন। তারা চট্টগ্রাম কাপ্তাই সড়ককে প্রশস্ত করে চার লেন করার দাবি জানানো হয়। দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে বলে ঘোষণা করা হয়। শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনায় বসার দাবিও জানান।
এ সময় তারা তাদের আন্দোলনকে নিরাপদ সড়ক আন্দোলন আখ্যায়িত করেন এবং স্থানীয় জনগণকে এই আন্দোলনের পক্ষে সমর্থন প্রদানের আহ্বান জানান। পাশাপাশি দেশের সকল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের এই আন্দোলনে পাশে থাকার আহ্বানও জানানো হয়।
শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের পরে উপাচার্য ভবনে প্রেস ব্রিফিংয়ের আয়োজন করা হয়। এতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে বক্তব্য জানান ছাত্রকল্যাণ দপ্তরের পরিচালক অধ্যাপক ড. মো. রেজাউল করিম। তিনি জানান, শিক্ষার্থীদেরকে একাধিকবার আলোচনার প্রস্তাব দেওয়া হলেও তা ফলপ্রসূ হয়ে ওঠেনি। একাডেমিক কাউন্সিলের মুলতবি সভা অনুষ্ঠিত হবে এবং সেখানে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।
বিক্ষোভের জের ধরে বেলা ১টা নাগাদ একাডেমিক ভবন-৩-এর সবকটি বিভাগ, একাডেমিক ভবন-২-এর যন্ত্রকৌশল বিভাগ এবং তড়িৎ কৌশল বিভাগের প্রধান ফটকে তালা দেন বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা। দুপুর ২টা নাগাদ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে নিরবচ্ছিন্ন আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানান শিক্ষার্থীরা, চলমান আন্দোলনে গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় ভিসি বিল্ডিংয়ের নিচে টায়ারে আগুন ও উপাচার্য দপ্তরের ভবনে তালা দেন শিক্ষার্থীরা।
উল্লেখ্য, গত সোমবার বেলা সাড়ে ৩টার দিকে চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া থানার জিয়ানগরে মোটরসাইকেলে ঘুরতে বেরিয়ে দুর্ঘটনার শিকার হন চুয়েটের তিন শিক্ষার্থী। দ্রুতগতির শাহ আমানত পরিবহনের একটি বাস শিক্ষার্থীদের মোটরসাইকেলটিকে ধাক্কা দিলে ঘটনাস্থলেই মারা যান পুরকৌশল বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী শান্ত সাহা ও একই বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী তওফিক হোসেন। এ ঘটনায় বুধবার চারটি বাস আটক এবং একটি বাসে আগুন দেন বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা।