আন্তর্জাতিক ডেস্ক নিউজ :: ইসরায়েলি বাহিনীর বিমান ও স্থল হামলায় গত দুই দিনে ৩৯০ জন নিহত এবং ৭৩৪ ফিলিস্তিনি আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। ফিলিস্তিনের রাষ্টীয় সংবাদসংস্থা ওয়াফার বরাতে এই তথ্য জানিয়েছে কাতার ভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা। আজ শুক্রবার এক বিবৃতিতে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানায়, গত দুইদিন ধরে গাজার যোগাযোগ ব্যবস্থা সম্পূর্ণ ভেঙ্গে পড়েছে। ফলে ইসরায়েলি হামলায় হতাহতের সংখ্যা অস্পষ্ট রয়ে গেছে।
এরআগে পৃথক বিবৃতিতে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানায়, গত ৭ অক্টোবর থেকে ইসরায়েলি হামলায় গাজায় ২০ হাজার ৫৭ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এরমধ্যে ৭০ শতাংশেরও বেশি নারীও শিশু। এছাড়া আহত হয়েছেন ৫৩ হাজার ৩২০ জন।
এদিকে গাজা ভূখণ্ডের ২৬ শতাংশ বা পৌনে ৬ লাখ বাসিন্দা বিপর্যয়কর ক্ষুধা ও ভয়াবহ খাদ্য সংকটের মুখোমুখি হয়েছেন বলে জাতিসংঘের এক রিপোর্টে এই তথ্য উঠে এসেছে।
বৃহস্পতিবার জাতিসংঘের ওই রিপোর্টে বলা হয়েছে, অবরুদ্ধ গাজার পাঁচ লাখ ৭৬ হাজার ৬০০ জনেরও বেশি মানুষ ‘বিপর্যয়কর ক্ষুধার’ মুখোমুখি হয়েছেন। আর ইন্টিগ্রেটেড ফুড সিকিউরিটি ফেজ ক্লাসিফিকেশন (আইপিসি) রিপোর্টে বলা হয়েছে, গাজার সব বাসিন্দাই তীব্র খাদ্য নিরাপত্তাহীনতার সংকটে রয়েছে বলে।
বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডব্লিউএফপি)সহ জাতিসংঘের অন্যান্য সংস্থা ও বেসরকারি সংস্থার (এনজিও) তথ্য অন্তর্ভুক্ত করে আইপিসির তৈরি করা ওই রিপোর্টে বলা হয়েছে,টানা আড়াই মাস গাজায় আকাশ ও স্থলপথে নির্বিচারে হামলা করে চলেছে ইসরায়েলি বাহিনী। এতে করে ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ ওই ভূখণ্ডটিতে তীব্র মানবিক সংকট দেখা দিয়েছে। এতে গাজার ২৬ শতাংশ মানুষ তাদের খাদ্য সরবরাহ এবং সংকট মোকাবিলা করার সক্ষমতা হারিয়ে ফেলেছে। তারা বিপর্যয়কর ক্ষুধা (আইপিসি ফেজ ৫) এবং অনাহারের সম্মুখীন হয়েছে।
প্রসঙ্গত, ইসরায়েলি বর্বরোচিত হামলায় হাসপাতাল, স্কুল, শরণার্থী শিবির, মসজিদ, গির্জাসহ হাজার হাজার ভবন ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে। যা গত ৭৫ বছরে ফিলিস্তিনিদের জন্য সবচেয়ে মারাত্মক সংঘর্ষ হিসাবে চিহ্নিত করেছে।
মাঝে এক সপ্তাহব্যাপী যুদ্ধবিরতিতে ৮৪ ইসরায়েলি এবং ২৪ বিদেশিকে মুক্তি দেয় হামাস। বিনিময়ে ইসরায়েলি কারাগার থেকে ২৪০ ফিলিস্তিনিকে মুক্তি দেওয়া হয়েছিল, যার মধ্যে ৭১ জন মহিলা এবং ১৬৯ জন শিশু রয়েছে। যুদ্ধবিরতি শেষে গত ১ ডিসেম্বর থেকে গাজা উপত্যকায় পুনরায় সংঘাতে জড়ায় ইসরায়েল ও হামাস।
অন্যদিকে হামাসের হামলায় ইসরায়েলে নিহত হয়েছেন ১ হাজার ২০০ জন। পাশপাশি ইসরায়েল থেকে প্রায় ২৪০ জনকে জিম্মি হিসেবে গাজায় নিয়ে যায় হামাস। এরমধ্যে বন্দিবিনিময়ে ১০৫ জনকে মুক্তি দিয়েছে হামাস। তাদের কাছে এখনো প্রায় ১৩০ জন জিম্মি রয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।