নিজস্ব প্রতিবেদক :: রাজধানীতে বর্তমানে ৫৮টি ঝুঁকিপূর্ণ মার্কেট রয়েছে। এর মধ্যে অতি ঝুঁকিপূর্ণের তালিকায় রয়েছে ৯টি। মাঝারি ঝুঁকিপূর্ণ রয়েছে ১৪ টি। আর ঝুঁকিপূর্ণ তালিকায় রয়েছে ৩৫টি মার্কেট। সম্প্রতি ফায়ার সার্ভিস এন্ড সিভিল ডিফেন্সের এক জরিপে দেখা এ তথ্য দেখা গেছে। আজ রোববার (১৬ এপ্রিল) দুপুরে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স সদরদফতরে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান ফায়ারের পরিচালক (অপারেশন্স অ্যান্ড মেইন্টেইনেন্স) লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. তাজুল ইসলাম চৌধুরী। রাজধানী ঢাকার গুরুত্বপূর্ণ মার্কেট ও শপিং মলের অগ্নিঝুঁকি নিরসন এবং অগ্নিনিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ বিষয়ে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
তিনি বলেন, অতি ঝুকিপূর্ণ মার্কেটের তালিকায় রয়েছে- নিউ মার্কেট এলাকার গাউছিয়া মার্কেট, ফুলবাড়িয়া এলাকায় বরিশাল প্লাজা মার্কেট, টিকাটুলি এলাকায় রাজধানী ও নিউ রাজধানীর সুপার মার্কেট, লালবাগ এলাকায় আলাউদ্দিন মার্কেট, চকবাজার এলাকায় শাকিল আনোয়ার টাওয়ার ও শহীদুল্লাহ মার্কেট এবং সদরঘাট এলাকায় শরীর মার্কেট।
ফায়ারের পরিচালক তাজুল ইসলাম বলেন, নিউ সুপার মার্কেটে অগ্নিকাণ্ডে নাশকতা কি-না তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করছেন। তবে নিউ সুপার মার্কেটি আমাদের ঝুঁকিপূর্ণর তালিকায় ছিল। বারবার ঝুঁকিপূর্ণর বিষয়টি তাদেরকে জানানো হয়েছে। এছাড়াও ঈদকে কেন্দ্র করে মার্কেটের ভিতরে পর্যাপ্ত পোশাক রাখা হয়েছিলো। সিঁড়ির উপরে দোকান, এলোমেলো বৈদ্যুতিক তার, ওভার হিট এর কারনে দিনভর এসি চলাসব বিভিন্ন কারণে নিউ সুপার মার্কেটের আগুন দূরত্ব ছড়িয়ে পড়ে।
ফায়ার পরিচালক আরও বলেন, মার্কেটের ব্যবসায়ী ও মালিক সমিতিকে আমরা বলতে চাই, আপনারা মার্কেটের বিভিন্ন পয়েন্টে সারারাত নিজস্ব লোক নিয়োগ দিন। এতে করে যে শুধু নাশকতা রোধ করা যাবে তা না, বর্তমানে দেশের তাপমাত্রা বেশি, যদি অতিরিক্ত তাপমাত্রার কারণে মার্কেটের কোনও দাহ্য পদার্থে আগুন লাগে তারা প্রাথমিকভাবে আগুন নেভাতে কাজ করবে। এ ছাড়াও তিনি দেশের মার্কেটগুলোতে রাতে থেকে ধূমপান না করা, রান্না না করার নির্দেশনা দিয়েছেন।
তাজুল ইসলাম বলেন, ফায়ার সার্ভিসের পক্ষ থেকে ডিজিএফআই-এনএসআই সদস্যদের সঙ্গে নিয়ে আমরা প্রতিটি মার্কেট পরিদর্শন করেছি। তবে অতি বেদনার সঙ্গে বলতে হচ্ছে যে, পরিদর্শনে আমরা যা দেখেছি তা সন্তোষজনক নয়। পরিদর্শনের পর আমরা অনেক মার্কেটকে ঝুঁকিপূর্ণ এবং অতি ঝুঁকিপূর্ণ চিহ্নিত করেছি ও তাদের পরামর্শ দিয়েছি।
তিনি বলেন, এসব মার্কেটে অনেক ক্ষেত্রেই অগ্নিনিরাপত্তা আইন মানার ক্ষেত্রে চরম অবহেলা দেখা গেছে। এছাড়াও অধিকাংশ মার্কেটের লোকজনের মধ্যে প্রাথমিকভাবে আগুন নেভানোর ধারণা নাই, সেখানে অগ্নিনিরাপত্তা মহড়াও হয় না। এসব অবহেলার কারণে আগুন লাগছে এবং সম্পত্তি ও জনজীবন ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
মার্কেটে আগুন লাগার আরও বেশ কয়েকটি কারণ উল্লেখ করে তিনি বলেন, মার্কেটের নন ইঞ্জিনিয়ারিং ভবন নির্মাণ, নকশাবহির্ভূত এক্সটেনশন, মার্কেটের দোকানে গাদাগাদি করে কার্টুনে মালামাল রাখা, নিয়ম না মেনে মার্কেটের দোকানের ভেতর রাত্রিযাপন, ধূমপান করা, গ্যাস ব্যবহার করে খাবার রান্না করা ইত্যাদি।
তিনি বলেন, আমরা আজকে সকাল থেকে চারটি মার্কেটের মালিক সমিতির সঙ্গে কথা বলেছি। তাদের এ বিষয়ে ধারণা দিয়েছে। ‘সম্প্রতি লাগা মার্কেটের আগুনগুলোতে উৎসুক জনতার ভিড়ের কারনে আগুন নেভাতে বেগ পেতে হয়’ -উল্লেখ করেন পরিচালক।