October 22, 2024, 5:23 pm

রংপুর বিভাগীয় রোডমার্চে সরকার পতনের আন্দোলনে তরুণেরা মাঠে নেমেছে : মির্জা ফখরুল

Reporter Name
  • আপডেট Saturday, September 16, 2023
  • 62 জন দেখেছে

নিজস্ব প্রতিবেদক :: রংপুর থেকে দিনাজপুর পর্যন্ত ৯০ কিলোমিটার বর্তমান সরকার পতনের এক দফা দাবিতে তরুণদের রোডমার্চ গতকাল শনিবার করেছে জাতীয়তাবাদী যুবদল, ছাত্রদল ও স্বেচ্ছাসেবক দল। শনিবার বেলা সাড়ে ১১ টা নগরীর গ্রান্ড হোটেল মোড়ে অবস্থিত রংপুর জেলা কার্যালয় থেকে এই রোডমার্চ শুরু হয়। এর আগে সকাল ১১ টায় বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সংক্ষিপ্ত বক্তব্য রাখেন। তিনি ঢাকা থেকে এসে সরাসরি রংপুর রোডমার্চে যোগদেন।

যুবদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকুর সভাপতিত্বে রংপুরের পথসভায় বক্তব্য দেন স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় সভাপতি এস এম জিলানী, ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রাশেদ ইকবাল খান। ‘জাগছে তারুণ্য জাগছে দেশ, টেইক ব্যাক বাংলাদেশ’ স্লোগানে উদ্বোধনী অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন যুবদলের কেন্দ্রীয় ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম মিল্টন, স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক রাজিব আহসান এবং ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক সাইফ মাহমুদ জুয়েল। এছাড়া রংপুর মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক সামসুজ্জামান সামু, সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট মাহফুজ-উন-নবী ডন, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক সাইফুল ইসলাম, সদস্য সচিব আনিছুর রহমান লাকুসহ যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল, ছাত্রদল, কৃষকদল, তাঁতী দল, মহিলা দল, ওলামা দল এবং জাসাসের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘আজ রংপুর থেকে তারুণ্যের রোডমার্চ শুরু হলো। যতদিন এই সরকারের পতন ঘটাতে না পারবো ততদিন রাজপথে থাকবো।’

তিনি বলেন, এক দফা দাবিতে ঐক্যবদ্ধ। জনগণ ভোট চোর ফ্যাসিবাদী সরকারকে ক্ষমতা থেকে হটিয়ে নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলন করছে। তাদের ক্ষমতা থেকে নামাতে হবে। এ জন্য এবার তরুণরা রাজপথে নেমেছে। নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন করে এ সরকারে পতন ঘটনো হবে। জাতীয় সরকার গঠন করা হবে। ঐক্যমতের ভিত্তিতে ৩১ দফা কর্মসূচির মাধ্যমে দেশকে দুর্নীতি ও শোষণমুক্ত করা হবে।’

তিনি বলেন, ২০১৪ সালে একটা নির্বাচন হয়েছিল, সেটা কী ধরনের নির্বাচন হয়েছিল সবাই জানে। ১৫৩ জনকে বিনা প্রতিদ্বন্দিতায় নির্বাচিত ঘোষণা করা হয়েছিল। রংপুরের মানুষও ভোট দিতে পারেনি। আর ২০১৮ সালের নির্বাচনে আগের রাতেই সব ভোট হয়ে গিয়েছিল। যে সরকারের আমলে পরপর দুটি নির্বাচন ডাকাতি হয়ে যায়, চুরি হয়ে যায়, জনগণ ভোট দিতে পারে না সেই সরকারের অধীনে আর নির্বাচন করা যায় না।

মির্জা ফখরুল বলেন, শুধু বিএনপি নয় বাংলাদেশের সকল রাজনৈতিক দল সিদ্ধান্ত নিয়েছে এই সরকারের অধীনে আর কোনো নির্বাচন নয়। বাম গণতান্ত্রিক জোট আমাদের সঙ্গে নেই কিন্তু তারাও ঘোষণা দিয়েছে আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচনে যাবে না।

বেগম খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা ভালো নেই উল্লেখ করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, আমাদের নেত্রীকে মিথ্যা মামলা দিয়ে আটক করে সাজা দিয়ে কারাগারে রাখা হয়েছিল। এখন তাকে গৃহবন্দি করে রাখা হয়েছে। তিনি (খালেদা জিয়া) অত্যন্ত অসুস্থ, ডাক্তাররা সবাই খুব চিন্তিত। এই সরকারের কাছে তার পরিবার এবং আমরা বারবার তাকে বিদেশে নিয়ে চিকিৎসার ব্যবস্থা করার জন্য বলেছি। কারণ ডাক্তাররা বলেছেন এখানে তার চিকিৎসা করার কোনো সুযোগ তাদের আর নেই।

তিনি আরও বলেন, সরকার আমাদের কোনো কথাই শুনছে না। অথচ তারা নিজেরা (এমপি-মন্ত্রীরা) চিকিৎসার জন্য বারবার বিদেশ যাচ্ছে। এক-এগারোর সময় বর্তমান স্বঘোষিত প্রধানমন্ত্রী তিনিও বন্দি ছিলেন, তখন তিনি কানের অসুখের কথা বলে প্যারোলে মুক্তি নিয়ে আমেরিকা গিয়েছিলেন। অথচ আজকে সেই প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে বিদেশে চিকিৎসার কোনো সুযোগ দিচ্ছেন না। এর আগে সকাল ১০টায় জাসাস শিল্পীদের পরিবেশনায় দলীয় সংগীতের মধ্যদিয়ে তারুণ্যের রোডমার্চের প্রথম পর্ব শুরু হয়। পরে পথসভা শেষে গাড়িবহরে যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদল আয়োাজিত তারুণ্যের রোডমার্চ রংপুর থেকে দিনাজপুর অভিমুখে যাত্রা করে।

পথিমধ্যে নীলফামারীর সৈয়দপুর কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল মাঠে দুপুর ১টা ৪৫ মিনিটে অনুষ্ঠিত পথ সভায় সৈয়দপুর রাজনৈতিক জেলা বিএনপির সভাপতি অধ্যক্ষ আব্দুল গফুর সরকারের সভাপতিত্বে বক্তব্য দেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, বাংলার মাটিতে আওয়ামী লীগের নীল নকশার কোন পাতানো নির্বাচন করতে দেওয়া হবে না। তাদের ওই নির্বাচনে বিএনপিতো নয়ই, অন্যকোন দলও অংশ নিবেনা। জনগনকে সাথে নিয়েই সে নির্বাচন প্রতিহত করে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে বাধ্য করা হবে। একদফার আন্দোলন সফল করতে এখন থেকে নেতাকর্মীদের রাজপথে থাকার আহবান জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল বলেন, বিএনপির হাজার হাজার নেতাকর্মীকে জেলে আটক রাখা হয়েছে। তাদের দায়ের করা সাজানো মামলায় নিম্ন আদালতে গেলে জামিন দেয়া হয় না। ফলে ওইসব মামলায় দিনের পর দিন বিএনপির নেতাকর্মীদের কারাবাস করতে হচ্ছে। আবার নির্বাচনের আগে নেতাদের জেলে আটক রাখার ষড়যন্ত্র করছে তারা। তাই তাদের সকল অন্যায় অপকর্মের জবাব দিতে এক দফার আন্দোলনের অংশ হিসেবে তারুণ্যের রোডমার্চ শুরু হলো, আর এ কর্মসূচি সেদিন শেষ হবে যেদিন এ সরকারের পদত্যাগ ঘটবে।

সৈয়দপুর কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল মাঠে অনুষ্ঠিত পথ সভায় অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, সৈয়দপুর রাজনৈতিক জেলা বিএনপির সিনিয়র সহসভাপতি ও সাবেক এমপি বিলকিস ইসলাম, সিনিয়র সহসভাপতি এ্যাড. এস এম ওবায়দুর রহমান, সহসভাপতি শফিকুল ইসলাম জনি, সৈয়দপুর রাজনৈতিক জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শাহীন আকতার শাহিন, সাংগঠনিক সম্পাদক আনোয়ার হোসেন প্রামাণিক, প্রচার সম্পাদক আবু সরকার, উপজেলা বিএনপির সভাপতি রেজাউল করিম লোকমান, সাধারণ সম্পাদক কামরুল হাসান কার্জন, পৌর বিএনপি সভাপতি শেখ বাবলু, কিশোরগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল্লাহ আল মামুন, সাধারণ সম্পাদক তাজুল ইসলাম ডালিম, জেলা যুবদলের আহবায়ক তারিক আজিজ, সদস্য সচিব হাজী পারভেজ আলম গুড্ডু, জেলা ছাত্রদলের সভাপতি হোসাইন মোহাম্মদ আরমান, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি পৌর কাউন্সিলর এরশাদ হোসেন পাপ্পু, সাধারণ সম্পাদক এম এ পারভেজ লিটন, জেলা কৃষক দলের সভাপতি মাজহারুল ইসলাম মিজু, সাধারন সম্পাদক সাদেদুজ্জামান দিনার, জেলা তাতীঁদলের সদস্য সচিব জুয়েল রানা, জেলা মহিলা দলের সভাপতি রওনক জাহান রেনু, সাধারন সম্পাদক রুপা প্রমুখ।

সৈয়দপুর ওয়াবদার মোড়ে নীলফামারী জেলা বিএনপির সভাপতি আলমঙ্গীর সরকারের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন, সাধারন সম্পাদক জহুরুল আলম, সদর উপজেলা বিএনপির সভাপতি রাহেদুল ইসলাম দোলন, সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট কাজী আখতারুজ্জামান জুয়েল, সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আজিম হোসেন, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক মোর্শেদ আযম, জেলা ছাত্রদলের সভাপতি মারুফ পারভেজ প্রিন্স প্রমূখ।

সোস্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই সম্পর্কিত আরও খবর