নিজস্ব প্রতিবেদক :: ময়মনসিংহ জেলার ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা পরিষদের সামনের শতবছরের সরকারি রেন্ট্রি গাছ কমদামে বিক্রি করার অনিয়মের অভিযোগ ইউএনও’র বিরোদ্ধে উঠে। গত মঙ্গলবার উপজেলা পরিষদ চত্বরের শতবর্ষী একটি রেন্ট্রিগাছ সহ ২১টি গাছ ১ লাখ ৭০ হাজার টাকায় বিক্রি করে উপজেলা প্রশাসন। এতে এ উপজেলার ঐতিহ্যের ধারক ছায়াদানকারী শতবর্ষী রেন্ট্রি গাছটি বিক্রি করায় জনমনে ব্যাপক আলোচনা- সমালোচনা ও তীব্র ক্ষোভের সঞ্চার সৃষ্টি হয় ইউএনও হাফিজা জেসমিনের ব্যাপারে। হাফিজা জেসমিন এ উপজেলায় যোগদানের পর থেকে টিআর, কাবিখা,ভিজিডি’র তালিকা সহ বিভিন্ন প্রকল্পের একাদিক দূর্ণীতির অভিযোগ রয়েছে। তার কাছে কোন ভুক্তভোগী যেকোন বিষয়ে অভিযোগ করলে তিনি অন্যের নিকট তদন্তভার দিয়ে দায়সারা হন। এছাড়াও ইওএনও’র সরকারি গাড়ী নিজে জনস্বার্থে ব্যবহার নাকরে ঈশ্বরগঞ্জ থেকে তার স্বামী কর্মস্থলে ভালুকায় নিয়ে ভোর সকালে যায় এবং রাতে ভালুকা- ত্রিশাল শহর থেকে বালিপাড়া, কানুরামপুর হয়ে ঈশ্বরগঞ্জে গাড়ীতে চড়ে আসে। এতে জ্বালানি তেল অপচয় হয়। মাইজবাগ ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আনোয়ার পারভেজ ক্ষমতায় থাকা কালিন সময়ে হারুয়ায় নিজের অর্থ দিয়ে সরকারি কাজ করলেও ইউএনও টালবাহানা করে বিল না দেওয়ায় আনোয়ার পারভেজ ক্ষুব্দ হয়ে ইটের ঢালাই থেকে রট খুলে নেয়া শুরু করে।কিছুদিন পূর্বে বিষয়টি নিয়ে বহুল প্রচারিত দৈনিক সমকাল পত্রিকায় নিউজ হয়।অপরদিকে সাবেক ইউএনও’র সাবেক গাড়ী চালক মজিবুর রহমানের বিগত কয়েক মাসের বেতন দেয়নি।মজিবুর রহমান বারবার ইউএনও’র কাছে বকেয়া বেতনের জন্য দারস্থ হয়েও অদ্যবদি কোন টাকা পায়নি।এব্যাপারে মজিবুর বলেন আমি আগে ইউএনও’র সরকারি গাড়ী চালাইতাম।আমি একজন গাড়ী চালক।আমাকে বকেয়া বেতন দিলে উপক্রিত হতাম। অনিয়মের বিষয় নিয়ে একাদিক বিভিন্ন পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হয়। গাছগুলো উপজেলা প্রশাসন থেকে ক্রয় করেন সাবেক কমিশনার আবদুল হোসেন। ক্রয়ের কিছুক্ষণ পরেই উপজেলা কাঠ ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবদুল আজিজের নিকট ৩ লক্ষ ৮০হাজার টাকায় বিক্রি করে দেন। এ বিষয়টি ক্রেতা ও বিক্রেতা দু’জনই নিশ্চিত করেছেন প্রতিনিধিকে। এর আগে ২৯ এপ্রিল উপজেলা নিবার্হী অফিসারের অফিসিয়াল ফেসবুক আইডি থেকে একটি নিলাম বিজ্ঞপ্তির পোষ্ট করা হয়। সেখানে বলা হয়, মরা ও ঝড়ে উপড়ে পড়া ২১টি গাছ নিলামে বিক্রয় করা হবে। কিন্তু বিজ্ঞপ্তিতে মরা গাছ উল্লেখ থাকলেও বিক্রি করা হয় শতবর্ষী তাজা সবুজ সুন্দর মনোরম পরিবেশ বান্ধব রেন্ট্রি গাছ। জনস্বার্থের কোন সরকারী গাছ বিক্রি করতে হলে তা পরিবেশ অধিদপ্তরে অনুমতি বা চারপত্র নেয়ার বিধান রয়েছে।৪ মে বহুল প্রচারিত দৈনিক যুগান্তর পত্রিকায় রেন্ট্রি নিয়ে সংবাদ প্রকাশিত হয়। তাজা গাছ বিক্রির বিষয়ে জানতে চাইলে ইউএনও হাফিজা জেসমিন জানান, সরকারি নিয়ম অনুযায়ি গাছ নিলামে বিক্রি করা হয়েছে।বীর মুক্তিযোদ্ধা হাবিবুর রহমান আকন্দ হলুদ জানান, হাজারো পাখির কলরবে মুখরিত থাকত শতবর্ষী গাছটি। এছাড়াও প্রতিদিন বিভিন্ন ইউনিয়ন থেকে উপজেলা পরিষদে সেবা নিতে আসা শতশত মানুষ এ গাছটির নিচে ছায়ায় আশ্রয় নিত। এ গাছটি কাটা হলে এ উপজেলার শতবর্ষের একটি ঐতিহ্য বিলীন হয়ে যাবে। এসব ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষ সঠিকভাবে তদন্ত করলে দূর্ণীতির চিত্র বেড়িয়ে আসবে বলে মানে করেন এলাকাবাসী। সড়ক ও জনপথ বিভাগের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী বিজয় বসাকের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, দ্রুত সময়ের মধ্যে জায়গা মেপে নির্ধারণ করা হবে।