সৌজন্যের নজির গড়ে রাতারাতি আলোচনায় উঠে এসেছেন পাপুয়া নিউ গিনির প্রধানমন্ত্রী জেমস মারাপে। আলিঙ্গন, করমর্দনের পর হঠাৎ ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর পায়ে হাত দিয়ে সম্মান জানান এই বিদেশি রাষ্ট্রনেতা। গত রোববার (২১ মে) রাতের সেই দৃশ্য এখন ভাইরাল সোশ্যাল মিডিয়ায়। ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় রাষ্ট্রগুলোর সহযোগিতা সম্মেলনে অংশ নিতে পাপুয়া নিউ গিনি গেছেন নরেন্দ্র মোদী। রোববার রাতে দেশটিতে নামে ভারতীয় প্রধানমন্ত্রীর প্লেন। তখন স্থানীয় সময় ছিল রাত ১০টা। পাপুয়া নিউ গিনিতে সাধারণত সূর্যাস্তের পর কোনো অতিথি গেলে আনুষ্ঠানিক অভ্যর্থনা দেওয়া হয় না। তবে মোদীর জন্য সেই প্রথা ভেঙেছে দ্বীপরাষ্ট্রটি। ঘটা করে তাকে স্বাগত জানানো হয়েছে। আর সে জন্য বিমানবন্দরে উপস্থিত ছিলেন পাপুয়ার প্রধানমন্ত্রী মারাপে। প্লেন থেকে মোদী নামতেই তাকে আলিঙ্গন করেন জেমন মারাপে। দুই রাষ্ট্রনেতা করমর্দন করেন। এরপর আচমকাই মোদীর পায়ে হাত দিয়ে সম্মান জানান স্বাগতিক প্রধানমন্ত্রী। সঙ্গে সঙ্গে নিচু হয়ে মারাপেকে জড়িয়ে ধরেন মোদী। তার পিঠও চাপড়ে দেন তিনি।
সাধারণত দুই দেশের প্রধানমন্ত্রী বা রাষ্ট্রনেতার সাক্ষাৎপর্বে আলিঙ্গন ও করমর্দনের মাধ্যমে সৌজন্য বিনিময়ের ছবিই এত দিন দেখে এসেছে সবাই। কিন্তু এক দেশের প্রধানমন্ত্রীর পায়ে হাত দিয়ে সম্মান জানাচ্ছেন অন্য দেশের প্রধানমন্ত্রী— এমন দৃশ্য সচরাচর দেখা যায় না। সেদিক থেকে নতুন নজিরই গড়েছেন পাপুয়া নিউ গিনির প্রধানমন্ত্রী। আর এরপর থেকেই আলোচনায় উঠে এসেছেন তিনি।
কে এই মারাপে?
জেমস মারাপের বয়স ৫২ বছর। তার রাজনৈতিক দলের নাম ‘পাঙ্গু পতি’। ১৯৯৩ সালে পাপুয়া নিউ গিনি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কলা বিভাগে স্নাতক পাস করেন এ নেতা। এরপর স্নাতকোত্তর করেন পরিবেশ বিজ্ঞান বিষয়ে। পরে বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন নিয়েও পড়াশোনা করেছেন। রাজনীতিতে পা রাখার আগে শিক্ষকতা করেছেন। ব্যবসাও সামলেছেন দীর্ঘদিন।
২০০৭ সালে প্রথমবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন মারাপে। ২০১৯ সালে পিপলস ন্যাশনাল কংগ্রেস পার্টি থেকে পদত্যাগ করেন। তারপর যোগ দেন পাঙ্গু পতি দলে। ২০১৯ সাললে পাপুয়া নিউ গিনির অষ্টম প্রধানমন্ত্রী হন তিনি। এর আগে শিক্ষামন্ত্রী ও অর্থমন্ত্রীর মতো গুরুত্বপূর্ণ পদেরও দায়িত্ব সামলেছেন। ২০২০ সালে মারাপে সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করার চেষ্টা হয়েছিল। তবে তা সফল হয়নি। মারাপের স্ত্রীর নাম রাচেল। তাদের সংসারে ছয়টি সন্তান রয়েছে