নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা :: গণঅধিকার পরিষদের একাংশের সভাপতি নুরুল হক নুর বলেছেনে, ‘প্রধানমন্ত্রীর জন্য আমার মায়া লাগে, কষ্ট হয়। তিনি একতরফা নির্বাচনের মাধ্যমে নিজের ও আওয়ামী লীগের করুণ পরিণতি ডেকে আনছেন।’
আজ সোমবার রাজধানীর পল্টনে এক সমাবেশে নুরুল হক এসব কথা বলেন। তফসিল বাতিল, সরকারের পদত্যাগ ও নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে বিএনপি ও সমমনা দলগুলোর ডাকা ৪৮ ঘণ্টার হরতালের সমর্থনে বিক্ষোভ মিছিল ও সড়ক অবরোধের পর এই সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করে গণঅধিকার পরিষদ।
সংক্ষিপ্ত সমাবেশে নুরুল হক নুর বলেন, ‘সরকার জনগণের কথা শুনছে না। জনগণের মতামত উপেক্ষা করে একতরফা নির্বাচনের দিকে যাচ্ছে, যা সরকারের জন্য আত্নঘাতী সিদ্ধান্ত। নির্বাচনে যাওয়ার জন্য বিরোধী দলগুলোকে চাপ দেওয়া হচ্ছে। ইতোমধ্যে অনেকে ভাগবাঁটোয়ারার জন্য লাইন দিয়েছে। কাজেই এখন কারা দেশপ্রেমিক কারা সুবিধাবাদী দালাল সেটা চেনার সময়। বিরোধী দলের নেতাকর্মীদেরও বলব, রাজপথে নামুন, নেতৃত্ব দিন ,জাতি আপনাদের নেতা বানাবে।’
তিনি বলেন, ‘সরকারের হাতে এখনও সুযোগ আছে। ২৮ অক্টোবর থেকে বিরোধীদলগুলোর আটক সব নেতাকর্মীর মুক্তি দিয়ে আলাপ-আলোচনা করে নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করে পদত্যাগ করুন, সুষ্ঠু নির্বাচন দিন।
দাবি আদায়ে আমরা শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি করছি। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে। আমাদের পরিষ্কার দাবি, সরকারকে পদত্যাগ করে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন দিতে হবে। হরতাল-অবরোধের পর প্রয়োজনে আমাদের অসহযোগ কর্মসূচি ঘোষণা হবে। যেখানে সামরিক বাহিনী, পুলিশ সদস্য, বিচারবিভাগসহ সরকারি কর্মচারীরাও আমাদের সঙ্গে রাজপথের আন্দোলন থাকবে।
গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মো. রাশেদ খাঁন বলেন, ‘আমরা প্রতিটা দিন হামলা-মামলা উপেক্ষা করে রাজপথে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছি। আমাদের আন্দোলন শান্তিপূর্ণ। দেখেন আমাদের কারও হাতে লাঠি নেই। অথচ আওয়ামী লীগ লাঠিসোঁটা হাতে উন্নয়ন ও শান্তি সমাবেশ করছে। সরকারের মন্ত্রী এমপিরাও বলছেন, গজারি, লগি-বইঠা নিয়ে রাস্তায় নামার জন্য। এভাবে তারা দেশে সহিংস পরিস্থিতি তৈরি করতে চায়। কিন্তু বিরোধীদলকে উস্কানির ফাঁদে পড়া যাবে না। আমাদের অনেকের নামে চার্জশিট দেওয়া হচ্ছে, ভয় দেখানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। কিন্তু ভয় দেখিয়ে জনগণকে আর ঘরে রাখা যাবে না। জনগণ রাজপথে নেমে গেছে।’
তিনি বলেন, ‘গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমেই এই সরকারের পতন হবে। বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ বিরোধীদলের নেতাকর্মীদের জামিন দিন। কেউই দলীয় সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচনের গল্প নির্বাচনে বিশ্বাস করে না। সুতরাং আমেরিকা ইউরোপ সংলাপের কথা বলছে। মহামান্য রাষ্ট্রপতির মাধ্যমে সংলাপের আয়োজন করুন। সমোঝোতার মধ্যে সরকারের পদত্যাগ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ নিশ্চিত হলেই আমরা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করব। দেশে আমরা শান্তি চাই। সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন না হলে বাণিজ্যিক নিষেধাজ্ঞা আসতে পারে। এতে দেশে দুর্ভিক্ষ লেগে যেতে পারে। সুতরাং সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ নিশ্চিত করে দেশ ও জাতিকে বাঁচান।’